মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: “প্রত্যেক শহীদের সম্মানে স্বচ্ছতা ও প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার”—প্রেস সচিব

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টার দুজন প্রতিনিধি। শোকাহত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা ক্ষোভ ও বেদনার বাস্তব চিত্র প্রত্যক্ষ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “গতকাল আমরা মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবস্থান করেছি। চাইলে তার আগেও চলে আসতে পারতাম। কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ ও বলপ্রয়োগবিহীন পথেই ছিলেন অটল। পরিবেশ স্থিতিশীল হওয়ার পরই আমরা স্কুল ত্যাগ করি।”
তিনি জানান, নিহত ও আহতের সংখ্যা নিয়ে অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তি দূর করতে কলেজে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন উপদেষ্টারা। সেখানে কলেজের রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়মিতভাবে হতাহতের তালিকা হালনাগাদ করা হবে। এছাড়া, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদেরও এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আজ (২৩ জুলাই) থেকে কন্ট্রোল রুমটি পূর্ণভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, “২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বহু বড় দুর্ঘটনার সংবাদ আমি কাভার করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। শুরুতে নিখোঁজদের বিষয়ে পরিবারগুলো রিপোর্ট করে এবং হাসপাতাল ও প্রশাসনের তথ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে অধিকাংশ নিখোঁজের অবস্থান শনাক্ত হয়। মাইলস্টোন কলেজও চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতির তালিকা বিশ্লেষণ করে নিখোঁজদের সনাক্ত করতে পারে।”
প্রেস সচিব আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে হাসপাতালগুলো থেকে তথ্য দিচ্ছে এবং সামরিক বাহিনীও সহায়তা করছে। “সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতের সংখ্যা গোপন করার কোনো উদ্দেশ্য বা প্রয়োজন নেই”—এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা সবাই শহীদ। তাঁদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে আমরা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে চাই।”
এ দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই নির্মম ঘটনায় কেবল প্রাণহানিই হয়নি, একেকটি পরিবারের ভবিষ্যৎ থেমে গেছে। আমরা যেন সকল শহীদের মর্যাদা রক্ষায় শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি।”