মাইলস্টোনে অবরুদ্ধ থাকার কারণ জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনের সময় অবরুদ্ধ থাকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, তারা ইচ্ছা করলেই আগে চলে আসতে পারতেন, তবে উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পথেই অটল ছিলেন।
পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, "মঙ্গলবার আমরা নয় ঘণ্টা ধরে স্কুলে ছিলাম। চাইলে তার আগেও চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বনে প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ দরকার ততক্ষণ থাকবেন। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন সেটি প্রাসঙ্গিক ছিল।"
তিনি জানান, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মাইলস্টোন কলেজে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা। এই কন্ট্রোল রুমে নিহত ও আহতদের তথ্য প্রতিদিন হালনাগাদ করা হবে এবং কলেজ রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদেরও এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমটি বুধবার থেকেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রেস সচিব আরও লেখেন, “আমরা মাইলস্টোন কলেজ পরিদর্শন করেছি। শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছি, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকেই মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে তথ্য বিভ্রান্তির কথা বলেছেন।”
তবে প্রাণহানির সংখ্যা গোপনের অভিযোগ খণ্ডন করে শফিকুল আলম বলেন, “২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বহু বড় দুর্ঘটনা সংবাদ কভার করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি— বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক তথ্য বিশ্লেষণেই নিখোঁজদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ চাইলেই অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড বিশ্লেষণ করে নিখোঁজদের তালিকা নির্দিষ্ট করতে পারে।”
তিনি আরও জানান, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিত হাসপাতাল থেকে তথ্য দিচ্ছে, সেনাবাহিনীও সহায়তা করছে। সরকারের কোনো কিছু গোপন করার ইচ্ছা নেই।”
দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক ও সহমর্মতা জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “তারা সবাই শহীদ। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা দরকার। সরকার সেই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”