জুলাই গণঅভ্যুত্থান হত্যা মামলায় সাবেক এমপি তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

জুলাই মাসে ঢাকায় সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য ও যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সাবেক সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩০ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে শেরেবাংলা নগর থানায় রুজু করা হয়।
শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি তুহিন। এ সময় তিনি বিচারককে জানান, তার প্রয়োজনীয় ঔষধ শেষ হয়ে গেছে। তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোরশেদ আলম শাহীন ঔষধের প্যাকেট দেখিয়ে আদালতকে জানান, চিকিৎসা প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এসব ঔষধ সরবরাহের অনুমতি দেওয়া উচিত। তবে আদালত জানান, আদালত থেকে সরাসরি কোনো ঔষধ সরবরাহের নিয়ম নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ঔষধ নিতে হবে।
আলোচিত শুনানির সময় সাবেক এমপি তুহিন আদালতে হাসিমুখে ছিলেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যে মাথা নাড়তে দেখা যায় তাকে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, তুহিন ছাত্র আন্দোলন ও হত্যাকাণ্ডের পেছনে সক্রিয় ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে কিছু প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, তুহিনকে অভিযোগের নির্ভরযোগ্যতা ছাড়াই অনুমানের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা আইনসম্মত নয়। তাছাড়া, একজন সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে তার ভাবমূর্তি ও সামাজিক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চাওয়া হয়।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কড়া ভাষায় পাল্টা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, তুহিন ছিলেন "বিনাভোটে নির্বাচিত"। তার রাজনৈতিক পরিচয় ও কর্মকাণ্ড তাকে এ মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে যথাযথভাবে চিহ্নিত করে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশনের প্রাক্তন প্রধান সিইসি হাবিবুল আওয়াল নিজেই ডামি নির্বাচন স্বীকার করেছেন, সে কারণে এমন একজন বিতর্কিত এমপির পক্ষে বলার কিছু নেই।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ সাবিনা আক্তার তুহিনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি রিমান্ড শুনানির অপেক্ষায় ছিলেন।
ঘটনার প্রেক্ষাপট হিসেবে বলা যায়, জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকা অনেকেই নজরদারিতে রয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় তুহিনের গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তদন্তে নতুন তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যেই তার রিমান্ড মঞ্জুর করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।