মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: দাবি মানতে আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের, শান্তিপূর্ণ অবস্থানে উত্তাল উত্তরা

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে মাইলস্টোনের সামনের গোলচত্বরে জড়ো হন শত শত শিক্ষার্থী। এরপর তারা ৬ দফা দাবি জানিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
শিক্ষার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে সরকারের প্রতিনিধি না এলে বিএনএস সেন্টারের সামনে সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাদের ভাষায়, সরকার তাদের কথায় সাড়া না দিলে তারা বাধ্য হবে রাস্তা অবরোধ করতে।
শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড— ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত লেখা। তারা গোলচত্বরে বসে পড়ে অবস্থান নেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি:
১. নিহতদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ
২. আহতদের নির্ভুল তালিকা
৩. শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা
৪. নিহত ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ
৫. ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল
৬. প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, তারা কোনো ধরনের সহিংসতা চান না, তবে এ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের অভিযোগ, এত বড় দুর্ঘটনার পরও কেউ দায় নিচ্ছে না এবং কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যা অনভিপ্রেত।
দুর্ঘটনার পটভূমি:
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। সেসময় ভবনটিতে বহু শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট, পরবর্তীতে বিজিবি ও সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। হতাহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। এছাড়া, ৭৮ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন, অনেকেই গুরুতর দগ্ধ।