বাবার দায়ের কোপে শিশু-বন্ধুর বাড়িতে যুবকের মৃত্যু

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বন্ধুর বাড়িতে যুবক ও ঈশ্বরগঞ্জ বাবা দায়ের কোপে হাতে শিশু নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা নুরুল্লাহকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের গারুয়া গ্রামে ও বিকাল ৫ টার দিকে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বি-কাঁঠালিয়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, নান্দইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের পোঁড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে রিয়াদ (২৫) ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বি-কাঁঠালিয়া গ্রামের মো. নুরুল্লাহর ছেলে মোবারক (৭)
নান্দাইল মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার দুপুরে আচারগাঁও ইউনিয়নের গারুয়া গ্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনার পর থেকে ওই বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ওই ইউনিয়নের পোঁড়াবাড়িয়া গ্রামের হানিফ মিয়া নামে এক ব্যক্তির ইজিবাইক (অটোরিক্সা) বাড়ি থেকে চুরি হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গত মঙ্গলবার দুপুরে হানিফের লোকজন রিয়াদকে আটক করে। আটকের পর আচারগাঁও বিলপাড়ার সোহরাব উদ্দিনের বাড়ির সামনে একটি সালিশ দরবার হয়। সালিশ দরবারে আটক রিয়াদ হানিফের অটোবাইক চুরি করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন এবং এই চুরির সাথে গারুয়া ভাটুয়াপাড়া গ্রামের নাদিম মিয়াও জড়িত ছিলেন বলে জানান। পরে নাদিমকেও সালিশ দরবারে উপস্থিত করা হয়। তিনিও অটো চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।
খবর পেয়ে নাদিমের মা ময়না বেগম সালিশস্থলে গিয়ে মুছলেকা দিয়ে রিয়াদ ও নাদিমকে মুক্ত করে বাড়িতে নিয়ে যান। ওইদিন রাতে রিয়াদ তার বন্ধু নাদিমের সাথে তার বাড়িতেই থেকে যান। বুধবার স্থানীয়রা নাদিমের ঘরে রিয়াদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
ওসি তদন্ত মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে নাদিম ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক। ঘটনার তদন্ত চলছে ও খুনীদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উবায়দুর রহমান বলেন, ঘাতক নুরুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে তাকে বেঁধে রাখলেও অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১৫ দিন আগে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু দুই দিন ধরে তার মানসিক অবস্থা আবার খারাপ হতে শুরু করে। বুধবার সকাল থেকে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে অদূরের একটি জঙ্গলে বসে ছিলেন। বিকেলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে তার স্ত্রী জাকিয়া বেগম ছেলে মোবারককে বাবার জন্য ছাতা দিয়ে পাঠান।
মোবারক ছাতা হাতে বাবার কাছে পৌঁছানো মাত্রই নুরুল্লাহ তার হাতে থাকা দা দিয়ে সন্তানের মাথায় কোপ দেন। এতে শিশুটি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি মো. উবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী অভিযুক্ত নুরুল্লাহকে আটক করে। পরে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থ প্রক্রিয়াধীন।