সমাজচ্যুতির ঘোষণার ঘটনায় ফের সালিশ, ভুল স্বীকার করে মাফ চাইলেন অভিযুক্ত মাতাব্বররা

জামালপুর শহরের দাপুনিয়া পশ্চিম পাড়ায় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও মাইকিং করে ৭টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার দুই দিন পর রোববার রাতেই বসে নতুন সালিশ-বৈঠক। সেখানে অভিযুক্তরা নিজেদের ভুল স্বীকার করে ভুক্তভোগীদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার (১৩ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাতটি পরিবারকে একঘরে করার ঘোষণা দেয় স্থানীয় মাতাব্বররা। পরদিন রোববার বিকেলে ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ফলে তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন।
রোববার রাত ১০টার দিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বসে নতুন এক সালিশি বৈঠক। সালিস-বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, আছির উদ্দিন, এডভোকেট মানিক, রঞ্জুমিয়া ও দিদার হোসেনসহ এলাকার কয়েক’শ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সালিশে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের দায় স্বীকার করে এক ঘরে করে রাখা ৭ পরিবারের সদস্যদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত এলাকাবাসীর সামনে ভুল স্বীকার করে শান্তিপ‚র্ণ পরিবেশে এক সাথে বসবাসের অঙ্গীকার করেন। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আগের মাইকিংয়ের ভুল সংশোধন করে জানিয়ে দেওয়া হয় সাতটি পরিবারের বিরুদ্ধে নেওয়া পূর্বের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, রোববার রাতেই এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিরা দুই পক্ষকে নিয়ে সালিশ-বৈঠক করে বিষয়টির সমাধান করেছেন। উভয় পক্ষই এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অঙ্গীকার করেছেন। ফলে অভিযোগকারীরা তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য - শুক্রবার রাতে জামালপুর শহরের দাপুনিয়া পশ্চিমপাড়ায় মরহুম আজিজুল হক, ইসমাইল হোসেন মৌলভী, মুনসুর মিয়া, মানিক, জানিক, মজিবর ও নান্নুর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে এক ঘরে ঘোষণা করে স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় মাতাব্বর। বলা হয় "এই পরিবারের সদস্যদের সাথে কেউ মেলামেশা, লেনদেন বা সামাজিক সম্পর্ক রাখতে পারবেননা। এ নিষেধ অমান্যকারীকেও এক ঘরে করে দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রভাবশালীরা সালিশ ডেকে এক তরফাভাবে মুনসুর মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। জরিমানার টাকা না দেয়ায় মুনসুর আলীসহ ৭ পরিবারকে সমাজচ্যুতের ঘোষণা দিয়ে এক ঘরে করে করে রাখা হয়।