ইসলামপুরে জমি জবরদখল, প্রতিহত করতে গিয়ে আহত ২০

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের চর চাড়িয়া গ্রামে আদালতের বিচারাধীন একটি জমিতে জোরপ‚র্বক দখলচেষ্টাকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৯ মে) বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয় স‚ত্র জানায়, চর চাড়িয়া গ্রামের প্রায় শত বছরের পুরোনো ৭ একর ২৩ শতাংশ কৃষিজমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে রয়েছে জামাল উদ্দিন ও তার পরিবারের। বর্তমানে সেই জমিতে ধান পাঁকতে শুরু করেছে এবং কিছু অংশ ইতোমধ্যেই কাটা হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে পরিচিত ভূমিদস্যু বাক্কার আলী দেশীয় অস্ত্রসহ শতাধিক নারী-পুরুষ নিয়ে জোরপূর্বক ধান কেটে নিয়ে জমি দখল করে এবং সেখানে টিনের ঘর নির্মাণ করে।
প্রতিবাদ জানাতে গেলে জামাল উদ্দিনের পরিবারের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় গুরুতর আহত হন শরিফ উদ্দিন (৩২), নওশী পারভীন (১৮), শারমিন (৪০), শাহিদা বেগম (৪২), মোস্তফা (৩৪), কাউছার (১৮), সাইফুল (৪০), হাফিজুর (৫০), সবুজ (৩২) সহ অন্তত ২০ জন। আহতদের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিন বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে এই জমিতে চাষাবাদ করে আসছি। সকালে আমাদের দখলে থাকা জমিতে জোর করে ঘর তুলতে আসে তারা। বাধা দিলে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এখন আমরা মাঠে যেতে পারছি না। সেই জমিতে তারা এখনো অবস্থান করছে। বাড়ি থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছি।”
আব্দুল খালেক নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, “এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আদালতের বিচারাধীন জমি এমন দখল সম্প‚র্ণ অবৈধ। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত দখলদারদের উচ্ছেদ করে আমাদের চাষাবাদ নিশ্চিত করা হোক।”
বাক্কার আলীর পক্ষের কারো সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামছুজ্জামান বলেন, “জমি দখলের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
ইসলামপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ সাইফুল্লাহ সাইফ জানান- এই ঘটনায় শহিদুর রহমান বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত পাঁচজন গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী দোষীদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোক্তভোগীরা আদালতের বিচারাধীন জমিতে এ ধরনের দখলের বিরুদ্ধে দ্রæত প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও শান্তিপ‚র্ণভাবে চাষাবাদের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন।