শিশু ধর্ষণ, মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি
শেরপুরের সদরে উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া ভিটাকান্দা গ্রামে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা তুলে নিতে বাদী ও ভুক্তভোগীর স্বজনদের প্রাণনাশসহ নানান হুমকি দিয়েছে আসামির লোকজন। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে মামলার বাদী ও তার স্বজনরা। ১৫ জুলাই ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজন ও মামলার বাদী গণমাধ্যমকর্মীদের এ অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই (২৯) বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মামলায় অভিযুক্ত শমেজ উদ্দিন বইট্টা (৬৫) এর ছেলেরা বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। বইট্টার ছেলে লালমিয়া ও সুলতান মিয়া এবং নাতি সালমান আমাদের বাড়ির সামনে এসে বলেন- মামলা তুলে না নিলে ভিটাকান্দা গ্রামে থাকতে দেবেন না। এছাড়া তারা প্রয়োজনে উল্টো মামলা সাজিয়ে আমার ও আমার স্বজনদের হয়রানি করবে । একইসঙ্গে আমাদের মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন। আমরা জীবনের নিরাপত্তার জন্য থানায় অভিযোগ করেছি।
ভুক্তভোগীর ভাই আরও বলেন, আমার বোনটার জন্মের দুই বছরের মাথায় বাবা মারা যায়। ছোট বোন, ভাই ও মাকে নিয়ে আমি দিন আনি, দিন খাই। এমতাবস্থায় মামলা তুলে না নেওয়ায় বইট্টার ছেলেরা তাদের বাড়ির টিনের বেড়া ভেঙে এবং খড়ের গাঁদায় রাতে আগুন দিয়ে একটি সাজানো অভিযোগ আদালতে দায়ের করেছে। এসকল মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে আমাকে হেনস্তা করছে। আমি এর বিচার চাই। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ৬ জুলাই বিকেলে বইট্টা মিয়া তার পাশের বাড়ির স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর শিশুটিকে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে শিশুটির কান্নাকাটিতে স্বজনরা বিস্তারিত জানতে পারে এবং জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। আর শিশুটির বড় ভাইয়ের অভিযোগ সাপেক্ষে অভিযুক্ত বইট্টাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইদুল আলম বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। শিশুটিকে ডাক্তারি পরিক্ষাসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাদিকে আসামিপক্ষ কতৃক হুমকি সংক্রান্ত অভিযোগ সাপেক্ষে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।