ময়মনসিংহে একদিনে ছয় থানার ওসি বদলি, সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

জনস্বার্থে ময়মনসিংহ জেলার ছয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) একযোগে বদলি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। সোমবার দিবাগত রাতে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে এই আদেশের কথা জানানো হয়। একদিনে একাধিক ওসির একসঙ্গে বদলি হওয়ায় জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ওসিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় নেটিজেনদের।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে বদলির আদেশ জারি করা হয়। এর আগে ৪ মে হালুয়াঘাট থানার ওসিকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
বদলি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন:
-
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম খান শফিক – বদলি চট্টগ্রাম রেঞ্জে
-
গৌরীপুর থানার ওসি মির্জা মাজহারুল আনোয়ার – বদলি চট্টগ্রাম রেঞ্জে
-
ভালুকা থানার ওসি মো. শামছুল হুদা খান – বদলি চট্টগ্রাম রেঞ্জে
-
নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ – বদলি রাজশাহী রেঞ্জে
-
হালুয়াঘাট থানার ওসি আবুল খায়ের – বদলি এপিবিএনে
-
মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ কামাল হোসেন – বদলি বরিশাল রেঞ্জে
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জের নবনিযুক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়া এবং জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের দৃষ্টিভঙ্গি প্রশংসিত হয়েছে। একাধিক নেটিজেন মন্তব্য করে জানান, জেলার ওসিদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এই বদলির সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং জনস্বার্থে অত্যন্ত ইতিবাচক।
সূত্র জানায়, গৌরীপুর থানার ওসি মির্জা মাজহারুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বর্তমান এসপি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই জেলার ওসিদের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। পরবর্তীতে ডিআইজি মহোদয়ও বিষয়টি আমলে নিয়ে বদলির সুপারিশ করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “বেশ কিছু থানায় গ্রেপ্তার বাণিজ্য এবং সেবা পেতে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ছিল। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। এই বদলির মাধ্যমে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, জেলার সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, এতে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বাড়বে।
