সুন্দরবনে জলদস্যুর আস্তানা থেকে ৩৩ জেলে উদ্ধার

সুন্দরবনের খরখরী নদীর মাল্লাখালী এলাকায় জলদস্যু করিম শরীফ বাহিনীর অপহরণের শিকার ৩৩ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। এর মধ্যে ৬ জন নারী জেলেও রয়েছেন। উদ্ধার করা হয়েছে জেলেদের ব্যবহৃত ১৬টি কাঠের নৌকা, মাছ ধরার জাল ও অন্যান্য সরঞ্জাম।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোংলা ও নলিয়ান কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে এই উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ড মোংলা সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক।
জানা গেছে, বুধবার সকালে বন বিভাগের কাছ থেকে নিয়মমাফিক পাস-পারমিট নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে সুন্দরবনের উদ্দেশে রওনা দেন কয়রা উপজেলার জেলেরা। দুপুরের দিকে জলদস্যু করিম শরীফ বাহিনী তাদের অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করে। প্রত্যেক জেলের কাছে ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয় বলে জানিয়েছেন মুক্তিপ্রাপ্ত জেলেরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোস্টগার্ডের একটি যৌথ দল সুন্দরবনের খরখরী নদীর মাল্লাখালী এলাকায় অভিযান চালায়। কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে দস্যুরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে গহীন বনে পালিয়ে যায়। পরে দস্যুদের আস্তানা থেকে ৩৩ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত জেলেদের কোস্টগার্ড স্টেশনে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্যসেবা দেওয়া হয়। পরে তাদের পরিবারদের কাছে নৌকা ও সরঞ্জামসহ হস্তান্তর করা হয়। সকল জেলের বাড়ি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামে।
লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন শান্ত ছিল পরিস্থিতি। কিন্তু সম্প্রতি আবারও জলদস্যু ও বনদস্যুর তৎপরতা বাড়ছে। বেশ কিছুদিন ধরে সুন্দরবনের নদী ও খালে জেলেদের অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির খবর পাওয়া যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২৪ ঘণ্টাব্যাপী টহল ও নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জলদস্যু ও বনদস্যু দমন, মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা বিধান এবং নিরাপদ সুন্দরবন গঠনে এই টহল অব্যাহত থাকবে।