প্রতিপক্ষের হামলায় নড়াইলে বিএনপি নেতার কবজি বিচ্ছিন্ন

আধিপত্য বিস্তারের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নড়াইলের লোহাগড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সারুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির ওই নেতার ভাইসহ আরও দুজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া মিরাজ ফকির (৫৫) কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আহত অন্য দুজন হলেন তাঁর ভাই ইমরান ফকির ও প্রতিবেশী বাবুল শরীফ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাশিপুর ইউনিয়নের সারুলিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন মিরাজ ফকির। অন্য পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কাজী রওশন। এই পক্ষটি আওয়ামী লীগ–সমর্থিত বলে এলাকায় পরিচিত। রওশন পক্ষের লোকজন লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের অনুসারী। মতিয়ার গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরের দিকে প্রথমে রওশনকে ধরে নিয়ে যান মিরাজ ও তাঁর লোকজন। পরে খবর পেয়ে রওশনের পক্ষের লোকজন গিয়ে রামদা ও চায়নিজ কুড়াল দিয়ে মিরাজ, ইমরান ও বাবুলকে কুপিয়ে জখম করে। এরপর তাঁরা রওশনকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মিরাজের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনেরা মিরাজ ও বাবুলকে নড়াইল সদর হাসপাতালে এবং ইমরানকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক সোহেলী জামান বলেন, ‘আমাদের এখানে আসা একজনের (মিরাজ ফকির) একটি হাতের কবজি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁর শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও জখম হয়েছে। আরেকজনের শরীরেও জখম ছিল। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
ঘটনার পর থেকে রওশন পক্ষের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। এ কারণে তাঁদের পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদের জের ধরে আজ রওশনকে মারধর করার উদ্দেশে ধরে নিয়ে যান মিরাজরা। পরে রওশনদের লোকজন গিয়ে মিরাজদের তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেন। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখন স্বাভাবিক আছে। অপরাধীদের ধরার চেষ্টা চলছে।