২০ বছর পর নদীর তীরে বসবে কোরবানির পশুর হাট

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজার সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর তীরে প্রায় ২০ বছর পর পুনরায় বসছে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট। একসময় এই হাটটি স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। তবে নানা কারণে এটি স্থানান্তর হয়ে মালখানগর কলেজ মাঠে চলে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এই হাটটি পুনরায় চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর আগ্রহ ছিল। অবশেষে হাট ইজারাদারদের উদ্যোগে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আবারও নদী তীরে হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এ বছর ৪ লাখ টাকায় মালখানগর হাটের ইজারা নিয়েছেন মো. বিপ্লব মাদবর। তিনি হাট পরিচালনায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজার সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর তীরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটের মাঠে চলছে মাটি সমান করার কাজ। গরু বাঁধার জন্য বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী খুঁটি। শ্রমিকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে। পাশাপাশি পানি ও আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন এবং পানির ট্যাংক বসানোর কাজও শুরু হয়েছে। হাট ইজারাদার মো. বিপ্লব মাদবর বলেন, আমরা চাই এলাকাবাসীকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন একটি হাট পরিবেশ দিতে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, হাটটি সফলভাবে পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।মালখানগর গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে ধলেশ্বরী নদীর তীরে লঞ্চঘাট এলাকায় এই অঞ্চলের একটি বড় পশুর হাট বসতো। তখনকার দিনে এই হাট ছিলো আমাদের জন্য উৎসবের মতো শুধু পশু কেনাবেচাই নয়, মানুষের মিলনমেলাও হতো এখানে। পরে ২০০৫ সালের দিকে হাটটি মালখানগর কলেজ মাঠে স্থানান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, এবার বহু বছর পর আবার সেই লঞ্চঘাট এলাকায় হাট বসানো হচ্ছে। এটা দেখে আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি চোখে ভেসে উঠছে। সে সময়ের গরুর হাট, মানুষের ভিড়, নদীর ধারে চিৎকার, সবকিছু যেন আবার ফিরে এসেছে। এটা আমাদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটা ঐতিহ্য, যা ফিরে আসায় আমরা খুব খুশি। দীর্ঘদিন পর প্রিয় এই হাট ফিরে আসায় এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, আগামী জুনের ৩ থেকে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। কোরবানির হাটকে ঘিরে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। প্রতিটি হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় থাকবে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা।
আমরা চাই, ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন নিরাপদ ও স্বস্তিতে হাটে আসতে পারেন এবং পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন। যদি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাহলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।