নারায়ণগঞ্জ আদালতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ওপর হামলা

নারায়ণগঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হামলার শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বেলা পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত হাফেজ মো. সোলাইমান (১৯) হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য আনিসুল হককে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আনিসুল হকের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে কিল-ঘুষি মারেন তারা। হামলার সময় আনিসুল হকের মাথায় হেলমেট ছিল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন এবং দ্রুত প্রিজন ভ্যানে তুলে দেন।
সংবাদকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে কিল-ঘুষি মারা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় আদালত পুলিশের সদস্যরা হামলাকারীদের বাধা না দিয়ে শুধু আসামিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রিজনভ্যানে তোলার পরও আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন একদল আইনজীবী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় বিএনপির মিছিলের নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির এবং আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, "এজলাস থেকে বের হওয়ার পর কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তবে আমার নজরে আসেনি যে কেউ তাকে চর-থাপ্পর দিয়েছে।"
অন্যদিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির দাবি করেন, "আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে। এতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।"
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সোলাইমান। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট নিহতের ভগ্নিপতি শামীম কবির বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আসামিরও উল্লেখ রয়েছে।