রিকশা বিক্রি করে সুদের টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা, শ্বাসরোধে চালককে খুন

নোয়াখালীর সদর উপজেলার চর উরিয়া এলাকায় অটোরিকশাচালক বাবরের খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যাকারী মনিরুল ইসলাম মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি পুলিশের। এ সময় তার কাছ থেকে বাবরের ব্যবহৃত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো নিহত বাবরের ব্যবহৃত অটোরিকশাটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে মাইজদী পেট্রল পাম্প এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনিরুল ইসলাম মামুন নোয়াখালী পৌরসভার মধ্যম করিমপুর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় অটোরিকশাচালক বাবরের। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে চর উরিয়া এলাকার একটি সবজিখেতে বাবরের লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করলেও তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি নিখোঁজ ছিল। পরবর্তীতে এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে মাইজদী পেট্রল পাম্প এলাকা থেকে আসামি মনিরুল ইসলাম মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবরকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মামুন।
ওসি আরও জানান, এক ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নেওয়া ৪৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ৯০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হতে হয় তাঁকে। সেই অতিরিক্ত টাকা সংগ্রহ করতে পূর্বপরিচিত বাবরের অটোরিকশা বিক্রি করে টাকা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বাবরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মামুন। সেই মোতাবেক বাবরকে নিয়ে দত্তেরহাটে এসে জুসের সঙ্গে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের জালিয়াল গ্রামের নির্জন বাগানে অটোরিকশাটি রেখে বাবরকে নিয়ে প্রথমে সোনাপুর যান।
তারপর সিএনজিতে পূর্বচর উরিয়ার স্লুইচগেট-সংলগ্ন কৃষি অফিসের সামনে সবজিবাগানে নিয়ে জুস খাওয়ানোর পর বাবরকে তাঁর গায়ের গেঞ্জি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ভিকটিমের স্যান্ডেল বাঁশঝাড়ের পাশে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লিলেন গেঞ্জিটি তার পাশে কলাবাগানে রেখে পালিয়ে যান। নিহতের ব্যবহৃত অটোরিকশা উদ্ধার এবং এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি।