চট্টগ্রামে বিশ্বমানের কাস্টম হাউস করার পরিকল্পনা হয়েছে : এনবিআর চেয়ারম্যান

চট্টগ্রামে উন্নত ল্যাবরেটরিসহ বিশ্বমানের কাস্টম হাউস করার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে বিশ্বমানের একটি কাস্টম হাউস করার পরিকল্পনা হয়েছে। সেখানে একটি উন্নত ল্যাবরেটরি করা হবে। এইচআর হবে।’
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টায় আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ টাওয়ারের চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশন অফিসে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রাকবাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ আর্ন করা হয়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বৈষম্য চট্টগ্রামে। এখানে কোনো ল্যাবরেটরি নাই। ভাঙা অফিসে আমাদের দেশের রেভিনিউ কালেকশন হয়। আর যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেয়, তারা আরামে থাকেন।’
প্রস্তাবনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকার লাইসেন্স বিধিমালায় কালো আইন প্রণয়ন করেছে। এতে উত্তরাধিকারদের লাইসেন্স পেতে সহজ হয়। পাশাপাশি লাইসেন্স অটোমেশন করা। আমদানিকারকের অন্যায়ের কারণে সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল করার আইন চালু করা হয়েছে। এতে যদি শো-কজ (কারণ দর্শানো) করার সুযোগ দিলে, আমাদের জন্য সুবিধা হতো।’
ব্যবসা ও বাস্তবধর্মী আইন চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুল্কায়নের আগে ট্যাক্স দিয়ে দিই। বাংলাদেশে আমরা নিট এন্ড ক্লিন ট্যাক্স পেয়ার। কিন্তু বিগত সরকার আমাদের ৩ শতাংশের ট্যাক্স ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে গোয়ালে গরু নাই কিন্তু খাতায় গরু রাখা হয়েছে। আমরা এইসব ক্ষতিকর আইনগুলো বাদ দিয়ে বাস্তবধর্মী আইন চাই। আমরা চাই, আপনারা থাকতে এসব ঠিক করা হোক। পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট আসলে আমরা আবার আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোডিয়াম সালফেট আমদানিতে নীতিগত সংশোধন চান। আর বিগত সরকারের সময়ে পাশ করা একচেটিয়া আইনগুলো বাতিল বিষয়ে বিবেচনা করা। ব্যবসায়ীরা চাইলে এসব লবণ বলে বিক্রি করতে পারবে না। আমাদের ডলার চলে গেছে। ডলারে পেমেন্ট করা ২০০টি কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে। এ বিষয়ে আমরা একটা সুনির্দিষ্ট বিধি বাস্তবায়ন চাই।’
প্রস্তাবনা জানানোর পর এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে যা বলেছেন, সেটি খুবই যৌক্তিক। কেউ ভুল করলো কিনা, অপরাধ করলো কিনা সেটি নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া দরকার। এছাড়া আরেকটি বিষয় বলেছেন উত্তরাধিকারদের লাইসেন্সে শিথিল করা। আমরা জানি আপনাদের অনেক পড়াশোনা করতে হয়। বিধিমালা গুলো জানতে হয়, পরিবর্তিত বিধিমালা পড়তে হয়। আর আপনারা দেশের রাজস্ব আহরণে অনেক অবদান রাখেন। তাই ডিক্লেয়ারেশন দিয়ে আপনাদের লাইসেন্স করায় একটি পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ভ্যাট প্রণয়ন নীতিমালা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ভ্যাট ব্যবস্থা ঠিক হলে এবং সহজ হলে আমাদের রাজস্ব আরও অনেক বেশি আহরণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো হয়রানি হবে না। আমরা চাই, দুর্নীতি বন্ধ করতে। দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হলে আমাদের কাজে গতি আসবে। পাশাপাশি দেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনা সুন্দর হবে।’
