শ্রীপুরে ব্যবসায়ীকে হয়রানির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

গাজীপুরের শ্রীপুরে নূরুল আমিন (৫০)নামে এক ব্যবসায়ীকে হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় শ্রীপুর পৌরসভার গিলারচাল (আসাপাডা) এলাকায় ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নূরুল আমিন শ্রীপুর পৌরসভার গিলারচাল (আসাপাডা) এলাকার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার এমদাদ হোসেনের ছেলে। তিনি ইট ও বালুর ব্যবসা করেন।
নূরুল আমিন জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এআরএম সাফায়েত ওসমানসহ সাদা পোশাকে তিন জন তার পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। তারা দরজায় নক করলে তিনি দরজা খুলে দিলে তারা ঘরে প্রবেশ করেন। এসআই ওসমান তাকে বলেন, “ওসি স্যার আপনাকে ডাকছেন, এখনি থানায় যেতে হবে।” পরে তাকে বাসা থেকে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসলে তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে এবং আশপাশের বাসাবাড়ির ভাড়াটিয়ারা এসআইকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনারা কারা? আমার বাবাকে কোথায় এবং কেন নিয়ে যাচ্ছেন?’ পরে ওসমান পরিচয় দেন, ‘আমরা পুলিশের লোক, শ্রীপুর থানা থেকে এসেছি।’ এ সময় তাদের বলা হয়, নূরুল আমিনের নামে মামলা বা কোনও অভিযোগ আছে কিনা দেখান। তা ছাড়া তারা থানা থেকে আসলে বা পুলিশের লোক হলে সাদা পোশাকে এসেছেন কেন? তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে অসুস্থ নূরুল আমিন অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে পুলিশ চলে যায়।
এক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীপুর থানা থেকে ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য আবার ওই বাসায় আসেন। এ সময় তারা দোতলা, তৃতীয় এবং চতুর্থ তলায় উঠে নূরুল আমিনকে খুঁজতে থাকে এবং প্রত্যেক ঘরের দরজায় লাথি মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে চতুর্থ তলার তালাবদ্ধ একটি ঘরের তালা পুলিশ কাঠ দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেন। এ সময় বাড়ির লোকজন তালা খুলে দিলে ঘরে প্রবেশ করে পুলিশ খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে চলে যায়।
অভিযুক্ত শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এআরএম সাফায়েত ওসমান জানান, নূরুল আমিনের নামে কোনও মামলা বা অভিযোগ নেই।
তাহলে কেন তার বাসায় গিয়েছিলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারেন, এমন একটি অভিযোগ ছিল। আরও কিছু জানতে চাইলে তিনি ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডলের কাছে সাদা পোশাকে ব্যবসায়ী নূরুল আমিনের বাসায় পুলিশ গিয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অভিযান চলছে, তাই হয়তোবা যেতে পারে।’ ব্যবসায়ীর নামে কোনও মামলা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখবো। যেহেতু তাকে আমরা ধরতে গেছি, তাই সে আমাদের টার্গেট।’