যেসব কারণে অভিশপ্ত ইহুদিরা

আল্লাহর নবী হজরত ইসহাক আ.-এর প্রথম সন্তান ইয়াকুব আ. ও ছিলেন একজন নবী। তার প্রসিদ্ধ আরেকটি নাম ছিলো ইসরাইল। তার বংশধররা বনি ইসরাইল ইসরাইলের সন্তান নামে পরিচিত লাভ করে ইতিহাসে। তাদেরকে অভিশপ্ত জাতি হিসেবে ইতিহাস বার বার স্মরণ করে। কেনো তারা অভিশপ্ত হলো এ বিষয়ে আজ কথা বলবো।
কোরআনুল কারিমের সুরা নিসায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ জাতি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। হজরত ইসমাঈল ও ইসহাক আ.-এর বাবা ছিলেন মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আ.। হজরত ইবরাহিম আ.-এর সন্তান ইসমাঈল আ.-এর বংশে জন্ম নিয়েছিলেন আল্লাহর প্রিয় হাবিব, শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সা.। হজরত ইসহাক আ.-এর বংশে জন্ম নিয়েছেন শতাধিক নবী।
বনি ইসরাইল (ইহুদি জাতি) অভিশপ্ত হওয়ার ১০টি কারণ তুলে ধরা হয়েছে সুরা নিসার ১৫৫-১৬১ আয়াতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেন, সুতরাং তাদের মধ্যে কতক তো তার প্রতি ঈমান আনে এবং কতক তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (ওই কাফিরদের সাজা দেওয়ার জন্য) জ্বলন্ত আগুনরূপে জাহান্নামই যথেষ্ট।
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে, আমি তাদেরকে জাহান্নামে ঢোকাব। যখনই তাদের চামড়া জ্বলে সিদ্ধ হয়ে যাবে, তখন আমি তাদেরকে তার পরিবর্তে অন্য চামড়া দিয়ে দেব, যাতে তারা শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাক্ষমতাবান প্রজ্ঞাময়। যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আমি তাদেরকে এমন সব উদ্যানে দাখিল করব, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত থাকবে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। তাতে তাদের জন্য পুতঃপবিত্র স্ত্রী থাকবে। আর আমি তাদেরকে দাখিল করব নিবিড় ছায়ায়।
হে মুসলিমগণ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই না উৎকৃষ্ট। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।
হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, তার রসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখতিয়ারধারী তাদেরও। ৪৭ অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কোনও বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়, তবে তোমরা আল্লাহ ও পরকালে সত্যিকারের বিশ্বাসী হয়ে থাকলে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রসুলের উপর ন্যস্ত কর। এটাই উৎকৃষ্টতর এবং এর পরিণামও সর্বাপেক্ষা শুভ।
হে নবী! তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা দাবি করে, তোমার প্রতি যে কালাম নাজিল করা হয়েছে তারা তাতেও ঈমান এনেছে এবং তোমার পূর্বে যা নাজিল করা হয়েছিল তাতেও, (কিন্তু) তাদের অবস্থা এই যে, তারা তাগুতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়? অথচ তাদেরকে আদেশ করা হয়েছিল, যেন (সুস্পষ্টভাবে) তাকে অস্বীকার করে। বস্তুত শয়তান তাদেরকে চরমভাবে গোমরাহ করতে চায়।যখন তাদেরকে বলা হয়, এসো সেই ফায়সালার দিকে, যা আল্লাহ নাজিল করেছেন এবং এসো রসুলের দিকে, তখন মুনাফিকদেরকে দেখবে তোমার থেকে সম্পূর্ণরূপে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
সংক্ষেপে কারণগুলো হলো- ১. তাদের অভিশপ্ত হওয়ার কারণ হলো ব্যাপক পাপাচার ২. আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম গ্রহণ করতে মানুষ বাঁধা দেয়া ৩. তাদের ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও সুদ খাওয়া ৪. অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা ৫. অঙ্গীকার ভঙ্গ করা ৬. নবিদের হত্যা করা ৭. আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম গ্রহণ না করে অজুহাত দেয়া যে আমাদের অন্তর তালাবদ্ধ, নতুন কোনো ধর্ম গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। ৮. কুফরি করা ৯. মারিয়ামের আ. প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়া ১০. ইসাকে আ. শূলে বিদ্ধ করে হত্যার মিথ্যা দাবি করা। ইত্যাদি কারণে তারা অভিশপ্ত হিসেবে পরিগণিত হয়।