বাংলাদেশ- মিয়ানমারের ফুটবলের বিশেষ সম্পর্ক: ৩০ বছর পর আবারও ইয়াঙ্গুনে ঐতিহাসিক জয়

বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিহাসে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর ও অবিচ্ছেদ্য। ১৯৯৫ সালে পুরুষ ফুটবলে প্রথম আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন ট্রফি বাংলাদেশ এনে দিয়েছিল মিয়ানমারের মাটিতে। তিন দশক পর একই স্থানে, একই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে এবার নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ নিশ্চিত করেছে।
১৯৯৫ সালের চার জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল মোনেম মুন্না ও ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবের গোলে ফাইনালে মিয়ানমারকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ট্রফি জয় করে। সেই টুর্নামেন্টে মিয়ানমার ফুটবল ফেডারেশনের আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ। আজ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল নারী ফুটবল দলে, যেখানে ঋতুপর্ণা-রুপ্নারা আবারো ইয়াঙ্গুনে মিয়ানমারকে হারিয়ে ২-১ গোলে এশিয়া কাপ নিশ্চিত করেছে।
কানাডায় বসবাসরত সেই সময়ের গোলদাতা মামুন জোয়ার্দার বলেন, “মিয়ানমারে মেয়েরা অসাধারণ খেলেছে। তাদের সাফল্য আমাদের ১৯৯৫ সালের ট্রফি জয়ের স্মৃতিকে মনে করিয়ে দিল। মিয়ানমার ফুটবল ইতিহাসে বাংলাদেশের অংশ হয়ে রইল।”
২০১৯ সালে মিয়ানমারে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী টুর্নামেন্টে উপস্থিত ছিলেন প্রতিবেদক, যেখানে মিয়ানমারের সাবেক ফুটবলার টিন অং বাংলাদেশের কাছে হারের স্মৃতি শেয়ার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “বৃষ্টির মধ্যে ৪-০ গোলে হারানো বাংলাদেশের কাছেই ২-১ গোলে ট্রফি হারানো আমাদের জন্য আক্ষেপের।”
অর্ধযুগ পর, ২০২৫ সালে নারী ফুটবল দল মিয়ানমারের মাটিতে ২-১ গোলে জয় তুলে নিয়ে মিয়ানমারকে আবারও আক্ষেপে ফেলে দিয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশকে ৫-০ গোলে হারানোর গর্ব এখন স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল বাছাইপর্বে ট্রফি না পেলেও, তাদের এই সাফল্য দেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছে। তবে যন্ত্রণার বিষয়, ১৯৯৫ সালের পুরুষ দলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সঠিক অবস্থান এখনো অনিশ্চিত, যা বাফুফে সংরক্ষণ করতে পারেনি।
তবে মিয়ানমারের মাটিতে বাংলাদেশের ফুটবল যাত্রার ঐতিহাসিক জয়গুলো যেন অনুপ্রেরণার ধারায় নতুন সূচনা করল।