ছদ্মবেশেও বাঁচেননি শীর্ষ জেনারেল: কীভাবে আলী শাদমানিকে খুঁজে পেল ইসরায়েল?

ইসরায়েলের কাছে আগে থেকেই হত্যার তালিকায় ছিলেন ইরানের খাতাম আল-আম্বিয়া সামরিক সদর দপ্তরের নতুন কমান্ডার আলী শাদমানি। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র চার দিন পরেই তিনি নিহত হন। তার আগেই ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তার পূর্বসূরি গোলাম আলী রশিদ। আর এই ঘটনা ঘিরে এখন গভীর সন্দেহ ও বিতর্ক—ইসরায়েল কীভাবে এত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও জেনারেল শাদমানিকে খুঁজে পেলো?
শাদমানি মৃত্যুর সময় সামরিক উর্দি পরিহিত ছিলেন না, ছিলেন সাধারণ ধুলোমাখা পোশাকে। কোনো সামরিক প্রতীক কিংবা স্মার্ট ডিভাইসও ছিল না সঙ্গে। তবু তিনি টার্গেট হন। তার অবস্থান প্রতি কয়েক ঘণ্টায় পরিবর্তন করা হলেও ইসরায়েল তাকে শনাক্ত করে এবং হত্যা করে।
এই ঘটনাকে ঘিরে উঠেছে প্রযুক্তিগত গোয়েন্দাগিরির নতুন প্রশ্ন।
শাদমানির মেয়ে মাহদিহ শাদমানি ইনস্টাগ্রামে বলেন: “আমার বাবা কোনও ফোন ব্যবহার করতেন না। তিনি প্রতিনিয়ত অবস্থান পরিবর্তন করতেন। নিরাপত্তা প্রোটোকল মেনে চলতেন। তবুও যুদ্ধ সদর দপ্তর পরিচালনার সময় ইসরায়েল তাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।”
তিনি দাবি করেন, বাবার মৃত্যু ঘিরে যে অভিযোগ—হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেই তার অবস্থান ফাঁস হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন।
এই হত্যাকাণ্ডের পর ইরানে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দাবি করে, এই অ্যাপ ইসরায়েলকে তথ্য পাচার করছে, যা শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের খুঁজে
বের করতে সহায়তা করছে।
তবে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, “এটি ইরানে ব্যবহারকারীদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের একটি অজুহাত মাত্র।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, আলী শাদমানির মতো শীর্ষ নিরাপত্তা-সচেতন ব্যক্তিকে হত্যা করার অর্থ—ইসরায়েল উচ্চমাত্রার সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স (SIGINT) ও মানব গোয়েন্দা (HUMINT) ব্যবহার করেছে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, তার আশেপাশে থাকা কাউকে ব্যবহার করে তার চলাফেরার তথ্য পেয়েছে ইসরায়েল।