বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমে আগ্রহের সঙ্গে আছে হতাশা ও উৎকণ্ঠা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে আগ্রহ ও প্রত্যাশা যেমন রয়েছে, তেমনি হতাশা ও উৎকণ্ঠাও আছে। বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
রোববার (৬ জুলাই) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, দীর্ঘ আলোচনা সত্ত্বেও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় নতুন নতুন প্রস্তাব ও বিরোধের কারণে কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। তবে বিএনপি ধৈর্য্য ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করছে।
তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার নামে নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের ক্ষমতা দুর্বল করার কোনো প্রস্তাব বিএনপি গ্রহণ করে না। এর বিরোধিতাই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গতিপূর্ণ।
বিএনপি পুলিশ সংস্কার কমিশনের বিষয়ে বলেন, এখনো আলোচনা হয়নি, তবে র্যাব বিলুপ্তিসহ বেশিরভাগ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৭ সুপারিশের ৪৬টিতে সম্মতি দিয়েছে দলটি।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮ সুপারিশের মধ্যে ১৮৭টিতে একমত, ৫টিতে আংশিক একমত এবং ১১টিতে ভিন্নমত রয়েছে।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের ৮৯ সুপারিশের ৬২টিতে একমত, ৯টিতে আংশিক একমত, ১৮টিতে ভিন্নমত জানিয়েছে বিএনপি।
নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ২৪৩ সুপারিশের ১৪১টিতে একমত, ১৪টিতে আংশিক একমত, ৬৪টিতে ভিন্নমত রয়েছে। কিছু সুপারিশ বিএনপি বাস্তবায়নযোগ্য মনে করেন না কারণ তা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৩১ সুপারিশে দফা ওয়ারি মতামত প্রদান করেছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্দিষ্টকরণ, প্রধান বিচারপতি নিয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়েছে তারা।
ফখরুল বলেন, রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় বিরাট প্রভাব ফেলবে এমন নতুন প্রস্তাব আলোচনা হয়নি, তাই বিএনপি এখনো মন্তব্য করা থেকে বিরত আছে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিএনপি শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়েছে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দলের ঐক্যবদ্ধ শক্তি ও অভিজ্ঞতা দিয়ে তারা কাজ করবে। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে বিএনপি সবচেয়ে সক্রিয়।
