বিডিআর হত্যাকাণ্ড: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চরম ব্যর্থতা, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্ত কমিশনের

ঢাকা, ২৫ জুন:
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা ছিল চরম অবহেলাপূর্ণ এবং ব্যর্থতায় পরিপূর্ণ—এমন মন্তব্য করেছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। একইসঙ্গে এই ভয়াবহ ঘটনার পেছনে দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্র এবং তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন মাত্রায় সম্পৃক্ততার প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
তৃতীয় সংবাদ সম্মেলন:
বুধবার (২৫ জুন) ধানমন্ডির বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম)-এ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান।
এই পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রমে ১১৪টি কর্মদিবস অতিক্রান্ত হয়েছে।
কমিশনের পর্যবেক্ষণ:
তিনি বলেন,
“বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।”
২৫ ফেব্রুয়ারির সকাল থেকেই পিলখানায় অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিবার থেকে বারবার সাহায্যের আকুতি এলেও প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, এমনটাও উল্লেখ করেন তিনি।
রাজনৈতিক সংযোগ ও সাক্ষ্যগ্রহণ:
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী,
এখন পর্যন্ত ৮ জন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে,
যাদের মধ্যে কেউ কারাগারে, কেউ পলাতক।
আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
১৫৮ জন সাক্ষ্যদাতার বক্তব্য নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে আছেন শহিদ পরিবারের সদস্য, বেঁচে যাওয়া কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সাবেক সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা এবং দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও।
আন্তর্জাতিক তথ্য অনুসন্ধান:
কমিশন জানিয়েছে,
ছয়টি দেশের দূতাবাস এবং
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
একইসঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং
৩৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ:
বহুমাত্রিক তদন্ত, তথ্য বিশ্লেষণ এবং জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে কমিশন ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তদন্তের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
