সফল হতে চান? এই ৭ অভ্যাস রপ্ত করুন

যখন আমরা জীবনে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন আনতে চাই, তখন যেসব অভ্যাসের কথা ভাবি, সেসব হলো ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, প্রতিদিন ব্যায়াম করা, নিয়মিত মেডিটেশন করার মতো বিষয়। নিঃসন্দেহে এসব অভ্যাস ভালো। তবে এমন আরও কিছু ছোট ছোট অভ্যাস আছে, যেসব রপ্ত করতে পারলে নিঃশব্দে বদলে যেতে পারে আমাদের জীবন।
ধীরে ধীরে এসব অভ্যাস আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য, কাজের দক্ষতা, সম্পর্ক এবং সামগ্রিক কল্যাণে বিস্ময়কর পরিবর্তন এনে দিতে পারে। যাঁরা জীবনে এগিয়ে যেতে পারছেন না বলে মনে করছেন বা দৈনন্দিন রুটিনে উন্নতি এনে আরও সফল হতে চান, তাঁরা নিয়মিত এসব অভ্যাস চর্চা করতে পারেন।
১. প্রতিদিন কৃতজ্ঞতার চর্চা করা
জীবনের ভালো দিকগুলো, সেটা ছোট হোক বা বড়, তা নিয়ে প্রতিদিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। এতে আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনেক উন্নত হবে। জীবনে কী নেই বা কী কী ভুল করেছি, তা ভুলিয়ে দেয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস। এই সাধারণ অভ্যাস মস্তিষ্ককে ভালো দিকগুলো দেখতে শেখায়, চাপ কমায় আর আনন্দ বাড়ায়। প্রতিদিন সকালে বা রাতে শুধু তিনটি বিষয়ের কথা লিখে রাখুন, যেসবের জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। এতে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে উঠবে। জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সহজ হবে এবং জীবনটাকে মনে হবে আরও পরিপূর্ণ।
২. ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা
বড় বড় লক্ষ্য ঠিক না করে ছোট ছোট ও বাস্তবসম্মত লক্ষ্য ঠিক করলে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পথ সহজ হয়। ছোট ছোট লক্ষ্য সহজে অর্জন করা যায়, যে কারণে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এই অভ্যাস একটা কাজের অন্তত শুরুটা করিয়ে দিয়ে দুশ্চিন্তা কমায়। তখন বড় বড় লক্ষ্যকেও অসম্ভব বলে মনে হয় না।
৩. ডিজিটাল ডিটক্সের অভ্যাস
আমরা প্রতিদিনই মুঠোফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা টিভি পর্দার সামনে অনেক সময় নষ্ট করি। এই স্ক্রিন টাইম আমাদের মনোযোগের ঘাটতি ঘটায়। এসব থেকে বিরতি নেওয়াকে বলে ডিজিটাল ডিটক্স। প্রতিদিন ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে বা খাওয়ার সময় স্ক্রিনমুক্ত থাকার মতো ছোট ছোট ডিজিটাল ডিটক্স করলে ঘুমের মান উন্নত হয়, স্ট্রেস কমে এবং সৃজনশীলতা বাড়ে।
৪. শান্ত শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন
যখন জীবন অতিরিক্ত চাপের মনে হয়, তখন দিনে মাত্র কয়েক মিনিটের ব্রিদিং এক্সারসাইজের অভ্যাস স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে মন স্থির রাখে। বেশ সহজ এ অনুশীলন সব সময় করা যায়, যা মানসিক চাপ সামলাতে, মনের জোর বাড়াতে ও পরিষ্কারভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। শান্ত শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন নিয়মিত চর্চা করলে ভেতর থেকে একধরনের প্রশান্তি পাবেন।
৫. ‘না’ বলতে শেখা
সবকিছুতে ‘হ্যাঁ’ বললে নিজের ওপর চাপ পড়ে। তাই ‘না’ বলা শিখতে হবে। এতে অনেক গুরুত্বহীন কাজ থেকে সময় বাঁচবে। ফলে আপনি সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন।
৬. প্রতিদিনের কাজের মূল্যায়ন
দিন শেষে মাত্র কয়েক মিনিট সময় নিয়ে আজকের দিনটি কেমন গেল, তা নিয়ে ভাবুন। এই ভাবনা ব্যক্তিগত উন্নয়নের পথে সহায়ক হবে। কী ভালো হয়েছে আর কী আরও ভালো হতে পারত, এই বিশ্লেষণ শেখার মানসিকতা গড়ে তুলবে এবং ভুল-সঠিক বুঝে পরবর্তী পথ ঠিক করতে সাহায্য করবে। এ অভ্যাস আপনাকে নিজের অনুভূতি, অভ্যাস ও লক্ষ্যগুলো ভালোভাবে বুঝতে শেখাবে। এতে আপনি আরও সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
৭. ঘুমের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলা
সুস্থ শরীর, মনোযোগ ও সৃজনশীলতার ভিত্তি হলো ভালো ঘুম। মোটকথা, ঘুম সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো ও ওঠা, ঘুমের আগে কম স্ক্রিন টাইম, আরামদায়ক পরিবেশে থাকা—এসবই ভালো ঘুম নিশ্চিত করে। ভালো ঘুম মনোযোগ, মেজাজ ও কর্মদক্ষতা বাড়ায়।
