দুধ কিনতে না পেরে ২০হাজার টাকায় নবজাতককে বিক্রি করলেন মা

সন্তানের সুচিকিৎসা ও দুধ কিনতে না পেরে নবজাতক শিশু খাদিজা খাতুনকে নগদ ২০ হাজার টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মা আশামনি খাতুনের (২৭)বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামে ঘটনাটি জানা জানি হয়। আশামনি খাতুন কাদাকাটি গ্রামের শামীম হোসেনের স্ত্রী।
সরোজমিনে গেলে আশামনি খাতুন জানান, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি কুল্যার মোড়ে একটা ক্লিনিকে তিনি দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করেন। ক্লিনিকের খরচ, বাচ্চার ওষুধ ও দুধ কিনতে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি । এরপর নিজের নবজাতক শিশু খাদিজাকে ১৪ দিন বয়সে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আশাশুনি তেঁতুলিয়া গ্রামের চা বিক্রেতা নিঃসন্তান রবিউল-কাজল দাম্পতির কাছে নগদ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি।
আশামনি আরো বলেন, আমি এ কাজ করেছি আমার সন্তানকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য। এ বিষয়ে চা বিক্রেতা রবিউলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার স্ত্রী কাজল বলেন, আমরা দরদাম করে কয়েকজন সাক্ষীর সামনে শর্ত দিয়ে টাকার বিনিময়ে বাচ্চাকে কিনে নিয়েছি। বাচ্চার টিকা কার্ডে পিতা-মাতার নামের স্থানে আমার স্বামী ও আমার নাম দিয়েছি। জন্ম নিবন্ধন সনদে তার নাম রাখা হয়েছে ফারিয়া জান্নাতুল। সে আমাদের পরিচয়ে পরিচিত হবে।
স্থানীয়রা জানান, শামিম যেখানে যায় সেখানেই বিয়ে করে। ২০১৬ সালে সে তালা উপজেলা লাউতাড়া গ্রামে সামাজিকভাবে বিবাহ করলেও সে বিয়ে টেকেনি। এরপর উপজেলার বদরতোলায় টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ করতে গিয়ে বাড়ির মালিকের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। সে বিয়েও টেকেনি। পরবর্তী নিজের চাচাত বোন বিলকিস খাতুনকে বিয়ে করে। বিলকিসকে নিজ বাড়িতে রেখে ইটভাটায় কাজ করতে গিয়ে শামীম আশামনিকে বিয়ে করে। পরে শামীমকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র চলে যায় বিলকিস।
আরো জানা যায়, কয়েকমাস আগে তার স্ত্রী আশামনির গর্ভে সন্তান থাকাকালীন বদরতোলায় টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ করতে গিয়ে হোসেনে আরা খাতুনকে ৫ম বিয়ে করে শামীম। গত শুক্রবার বুধহাটা বাজারের এক বাড়িতে রাত্রি যাপনের সময় স্ত্রী আশামনির কাছে ধরা পড়েন শামিম। এরপর থেকে ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে আসে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) সামছুল আরেফিন জানান, আমি চার দিন আগে আশাশুনি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি।