ইরানে হামলা নিয়ে তথ্য ফাঁসের প্রতিবেদন ঘিরে মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে ট্রাম্পের তীব্র আক্রমণ

সম্প্রতি ইরানের ওপর চালানো মার্কিন সামরিক হামলা নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস এবং তার ভিত্তিতে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম "ট্রুথ সোশ্যালে" দেওয়া এক পোস্টে তিনি সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও নিউ ইয়র্ক টাইমসকে 'ভুয়া' ও 'ব্যর্থ' আখ্যা দেন।
ট্রাম্প বলেন,
“ভুয়া সংবাদমাধ্যম সিএনএন, ব্যর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে মিলে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক হামলাগুলোর একটিকে খাঁটো করে দেখানোর চেষ্টা করছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে!”
তিনি আরও যোগ করেন,
“জনগণই এই সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলছে। যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অপারেশন সম্পন্ন করেছে, তাদের প্রতি এই সংবাদগুলো অত্যন্ত অসম্মানজনক।”
পেন্টাগনের বিপরীত মূল্যায়ন এবং প্রেসিডেন্টের দাবি
ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি, বরং কিছুটা সময় পিছিয়ে দেওয়া গেছে মাত্র। তবে ট্রাম্প এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন,
“আমরা নিখুঁতভাবে আঘাত করেছি। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে।”
এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এয়ার ফোর্স ওয়ানে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন,
“এই হামলা ছিল ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক অভিযান। তা নিয়ে যেভাবে সংবাদমাধ্যম অবজ্ঞাসূচক প্রতিবেদন করছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।”
ইরানে ক্ষমতা পরিবর্তনে অনিচ্ছা এবং পুতিনের ফোনালাপ
ট্রাম্প এক পোস্টে বলেন,
“আমি ইরানে সরকার পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা পোষণ করি না। আমি চাই পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হোক। শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিশৃঙ্খলা লাগে, কিন্তু আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না।”
এছাড়া তিনি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোন করে ইরান ইস্যুতে সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাব দেন, কিন্তু ট্রাম্প সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
“আমি পুতিনকে বলেছি, না, ইরান ইস্যুতে আমার সাহায্যের প্রয়োজন নেই, বরং আপনার কোনো সাহায্য লাগবে কি না তা বলেন।”
পটভূমি: হামলার পর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের (DIA) অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ও পারমাণবিক সেন্ট্রিফিউজগুলোর বড় অংশই অক্ষত রয়েছে।
এই হামলার প্রেক্ষাপটে ইরান, ইসরায়েল, এবং যুক্তরাষ্ট্র—তিন দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়, যা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে রূপ নেয়।
