ইরান পার্লামেন্টে IAEA’র সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত, উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা

২৫ জুন, তেহরান:
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)-র সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। বুধবার (২৫ জুন) অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে কোনো সদস্য প্রস্তাবের বিপক্ষে মত দেননি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এর আগে পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিশন একটি খসড়া অনুমোদন করে, যাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় IAEA-এর সঙ্গে চলমান সহযোগিতা বন্ধ করার জন্য। এতে বলা হয়, সংস্থার কর্মকাণ্ড ইরানের বিরুদ্ধে “আক্রমণের অজুহাত” হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
যা যা স্থগিত থাকবে:
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, IAEA-এর সঙ্গে যেসব কাজ চলমান ছিল তা বন্ধ থাকবে, এর মধ্যে রয়েছে—
পারমাণবিক স্থাপনায় নজরদারি ক্যামেরা স্থাপন
পরিদর্শন কার্যক্রম
সংস্থার কাছে তথ্য ও রিপোর্ট প্রদান
কমিশনের ভাষ্যমতে, এসব কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে কেবল তখনই, যখন ইরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।
স্পিকারের ব্যাখ্যা:
ইসলামী পরামর্শদাতা পরিষদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ বলেন,
“ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না। কিন্তু IAEA তাদের দায়িত্ব পালন না করে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।”
IAEA সম্প্রতি তাদের প্রতিবেদনে ইরানকে অসহযোগিতার জন্য কড়া সমালোচনা করে। তারা অঘোষিত পারমাণবিক স্থাপনার বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল এবং ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধ মজুদ নিয়ে উদ্বেগ জানায়।
পেছনের প্রেক্ষাপট:
এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনা। গত সপ্তাহেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু ব্যবহার করে ইরানের ফোর্দোসহ তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। যদিও মার্কিন ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির তথ্য মতে, হামলাটি ইরানের পারমাণবিক কাঠামো ধ্বংস করতে পারেনি, বরং কার্যক্রম কেবল কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা:
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা বাড়াবে এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে স্বচ্ছতা আরও কমে যাবে। ফলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।
