হীরা উৎপাদনে একক আধিপত্য হারিয়েছে আফ্রিকা, শীর্ষে এখন রাশিয়া ও কানাডা

একসময় হীরা উৎপাদনে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল আফ্রিকার। তবে সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে বৈশ্বিক চিত্র। এখন রাশিয়া, কানাডা ও অ্যাঙ্গোলার মতো দেশগুলোও উঠে এসেছে শীর্ষে।
২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, যেসব দেশে বছরে এক লাখ ক্যারেটের বেশি প্রাকৃতিক রত্নমানের হীরা উত্তোলন হয়, তাদের মধ্যে রাশিয়া, বোতসোয়ানা, কানাডা ও অ্যাঙ্গোলা রয়েছে অগ্রগামী স্থানে।
বিশ্বের মোট হীরার ৫০ শতাংশের বেশি এখন আসে রাশিয়া ও কানাডা থেকে। যদিও আফ্রিকা এখনও গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবেই বিবেচিত।
রাশিয়া: সর্বোচ্চ উৎপাদক
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হীরা উত্তোলন করে রাশিয়া। দেশটির সাইবেরিয়ার সাখা অঞ্চলে অবস্থিত মীর ও উদাচনিয়া খনি থেকে আসে অধিকাংশ রত্নমানের হীরা। খনিগুলো পরিচালনা করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ALROSA।
বোতসোয়ানা: গুণমানে শীর্ষে
উৎপাদনের দিক থেকে রাশিয়ার পরেই থাকলেও, হীরার গুণমান ও আকারের দিক থেকে বাজারমূল্যে বোতসোয়ানাই শীর্ষে। দেশটির Jwaneng খনিকে বলা হয় “বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান হীরার খনি”। এই খনির মালিকানা রয়েছে De Beers ও বোতসোয়ানা সরকারের যৌথ উদ্যোগ Debswana-এর হাতে।
কানাডা: নতুন শক্তি
১৯৯০-এর দশকে হীরার খনি আবিষ্কারের পর থেকেই দ্রুত উত্থান ঘটেছে কানাডার। বরফে ঢাকা উত্তরের দুর্গম এলাকায় চলমান খনিগুলোর কারণে দেশটি এখন বিশ্ব হীরা বাজারে শক্ত অবস্থানে। 'Conflict-free' হীরার জন্য কানাডার হীরা বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়।
অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া: বিরল হীরার খনি
অ্যাঙ্গোলার Lulo খনি থেকে উত্তোলিত হচ্ছে দুর্লভ Type IIa হীরা, যার মধ্যে রয়েছে উজ্জ্বল গোলাপি রঙের হীরাও। অপরদিকে, নামিবিয়া বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ সামুদ্রিক হীরা উত্তোলনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত।
অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র: অতীত ও সম্ভাবনা
অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত Argyle খনি, যা একসময় রঙিন হীরার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল, বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিকভাবে হীরা উৎপাদন না থাকলেও আর্কানসাসে পর্যটকরা নিজেরাই হীরা খুঁজে পেতে পারেন, যা একধরনের অনন্য অভিজ্ঞতা।
ভবিষ্যতের দিক: ল্যাব-হীরা ও নতুন সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন হীরার খনি আবিষ্কৃত হতে পারে। পাশাপাশি, ল্যাবে তৈরি হীরার জনপ্রিয়তাও দ্রুত বাড়ছে। দেখতে ও গুণে প্রাকৃতিক হীরার মতো হলেও, এই হীরাগুলোর দাম প্রায় ২৫ শতাংশ কম।
