যুক্তরাষ্ট্র-ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্য চুক্তি: রপ্তানি পণ্যে ১৯% শুল্ক, বিপুল আমদানির প্রতিশ্রুতি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, যার আওতায় ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি পণ্যের উপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। চুক্তির অংশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি, কৃষিপণ্য এবং যাত্রীবাহী বিমান কিনবে।
চুক্তিটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্টোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়। ট্রাম্প নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে বিষয়টি ঘোষণা করেন। তিনি সতর্ক করেছেন, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলে সেসব পণ্যের উপর আরও কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।
চুক্তির মূল শর্তাবলি:
ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লা আমদানি করবে
৪.৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন কৃষিপণ্য আমদানি করবে
বোয়িং কোম্পানির ৫০টি যাত্রীবাহী বিমান কিনবে, যার বেশিরভাগই বোয়িং ৭৭৭ মডেল
তবে এই শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে কিংবা পণ্য ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন কত দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিও প্রায় চূড়ান্ত
যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে পূর্বে ঘোষিত একটি বাণিজ্য চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে এখনো চুক্তির বিস্তারিত শর্তাবলি প্রকাশ করা হয়নি, বিশেষ করে অবৈধ পণ্য পরিবহন শনাক্তকরণ ব্যবস্থার বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
ছোট ও মাঝারি আকারের দেশগুলোকে শিগগিরই নতুন শুল্কহার সম্পর্কে জানানো হবে, যা প্রায় ১০ শতাংশের কিছু বেশি হতে পারে।
শুল্কনীতিতে কড়াকড়ি
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে এই হার আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে শুল্ক কার্যকর হওয়ার সময়সীমা ৯ জুলাই থেকে পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়।
এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নতুন শুল্কহারের বিষয়টি জানানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়াসহ ২০টিরও বেশি দেশ এ তালিকায় রয়েছে।
লক্ষ্য পূরণে এখনও পিছিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে ৯০টি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, এবং চীনের সঙ্গে একটি অস্থায়ী শুল্ক হ্রাস চুক্তি হয়েছে।
ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে, এবং আরও কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
