যেমন নাস্তা, তেমন দিন—সকালে কী খাবেন বলছেন বিশেষজ্ঞরা

সকালের নাস্তা—দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কিন্তু এই একটি বিষয়ে মানুষের উদাসীনতা চোখে পড়ার মতো। কেউ ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা খেয়ে বেরিয়ে পড়েন, কেউ বা টোস্ট বিস্কুটে সেরে নেন, কেউ আবার নাস্তা না করেই শুরু করে দেন ব্যস্ত দিন। আবার অনেকেই সোজা হোটেলে গিয়ে পরোটা-সবজি বা হালকা কিছু খেয়ে নেন। এই বৈচিত্র্য থাকা স্বাভাবিক হলেও পুষ্টিবিদরা বলছেন, এমন অনিয়মিত ও অপ্রতিসম নাস্তা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের নাস্তায় সঠিক পুষ্টি উপাদান না থাকলে সারাদিন শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভব করতে পারে। আর তাই নাস্তার প্লেটে থাকা উচিত ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ এবং কিছু পরিমাণ শর্করা। রান্না করা খাবার থেকে আমরা প্রোটিন ও শর্করা পেলেও, ভিটামিন ও খনিজের জন্য ভরসা রাখতে হবে বিভিন্ন ধরনের ফল ও শাকসবজির ওপর।
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন সকালে কিছু নির্দিষ্ট ফল খেলে শুধু পুষ্টিই নয়, বরং দিনভর শরীর থাকে চনমনে ও কর্মক্ষম। ফলের মধ্যকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, খনিজ, ভিটামিন ও এনজাইম শরীরকে রাখে তরতাজা এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ফল সকালের নাস্তার জন্য সবচেয়ে উপযোগী:
১। পেঁপে
সারা বছর পাওয়া যায় এমন ফলের মধ্যে পেঁপে অন্যতম উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন A, B2, B5, B9, C, E এবং K। এ ছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, কপার, জিংক ও আয়রন। পেঁপেতে আছে লাইকোপিন ও প্যাপেইন নামক শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস ও এনজাইম, যা হজমে সাহায্য করে এবং শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয়।
২। আপেল
‘প্রতিদিন একটি আপেল, রাখে ডাক্তার দূরে’—এই প্রচলিত কথার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। আপেলে রয়েছে ভিটামিন A, B1, B2, B3, B6, C ও E। ফাইবারসমৃদ্ধ এই ফল পেট ভরিয়ে রাখে অনেকক্ষণ, ফলে বাড়তি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। পটাশিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করে।
৩। পেয়ারা
ভিটামিন C-এর প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে পেয়ারা অতুলনীয়। একটি পেয়ারা একটি কমলালেবুর তুলনায় দ্বিগুণ ভিটামিন C সরবরাহ করে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন A, B, E, B6 এবং K। পেয়ারা ত্বকের জন্য উপকারী, আবার এতে থাকা ফোলেট ও ম্যাগনেশিয়াম শরীরের সার্বিক কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
সকালের নাস্তা যেন শুধু মুখরোচক না হয়ে, হয় স্বাস্থ্যকর—সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এক বা একাধিক ফল যোগ করলে শরীর যেমন চনমনে থাকবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে তা রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ জীবনের জন্য বড় ভূমিকা রাখবে।