মাইগ্রেন কমাতে ১১টি ঘরোয়া উপায়

মাইগ্রেন হলো মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের একটি জটিল রোগ। এর প্রধান উপসর্গ তীব্র মাথাব্যথা, যা সাধারণত ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই ব্যথা সময় সময় ফিরে আসে এবং এর সঙ্গে বমিভাব, বমি, আলো ও শব্দে অতিসংবেদনশীলতার মতো উপসর্গও দেখা দেয়।
নিয়মিত কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে মাইগ্রেন থেকে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যায়, এমনকি ব্যথা প্রতিরোধ করাও সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক মাইগ্রেন উপশমের ১১টি কার্যকর ঘরোয়া উপায়:
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীরে পানিশূন্যতা মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ। ঘাম, বমি বা বমিভাবের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করলে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং মাথাব্যথা কমে।
২. ঠান্ডা সেঁক দিন
কপাল, মাথার তালু বা গলায় বরফের প্যাক বা ঠান্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় চাপা দিন। এতে স্নায়ু শান্ত হয় এবং ব্যথা হ্রাস পায়।
৩. পুদিনার তেল ব্যবহার করুন
পেপারমিন্ট অয়েলে থাকা মেনথল উপাদান পেশি শিথিল করে ও মাথাব্যথা উপশমে সাহায্য করে। কপালে পাতলা করে মিশিয়ে লাগান (যেমন নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে)। ত্বক অতিসংবেদনশীল হলে আগে পরীক্ষা করে নিন।
৪. অন্ধকার ও নিরিবিলি ঘরে বিশ্রাম
উজ্জ্বল আলো ও উচ্চ শব্দ মাইগ্রেন আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। শান্ত, অন্ধকার ঘরে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে অনেক সময় ব্যথা কমে যায়।
৫. নিয়মিত ঘুম
অপর্যাপ্ত বা অতিরিক্ত ঘুম মাইগ্রেনের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমান এবং নির্দিষ্ট রুটিনে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন।
৬. আদা চা পান করুন
আদা বমিভাব ও মাথাব্যথা কমায়। এক কাপ গরম পানিতে কয়েক টুকরা আদা দিয়ে চা বানিয়ে দিনে ১–২ বার খেলে আরাম পাওয়া যায়।
৭. ভিটামিন বি২ গ্রহণ
রিবোফ্ল্যাভিন (ভিটামিন বি২) মাইগ্রেন প্রতিরোধে কার্যকর। এটি দুধ, চিজ, ডিম, মাছ ও মুরগির মাংসে পাওয়া যায়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্টও খাওয়া যেতে পারে।
৮. যোগব্যায়াম ও শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন
যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং পেশির টান হ্রাস করে। প্রতিদিন কিছু সময় শ্বাসনিয়ন্ত্রিত যোগব্যায়াম করলে মাইগ্রেনের মাত্রা কমে যেতে পারে।
৯. অ্যালকোহল ও ট্রিগারিং খাবার এড়িয়ে চলুন
চকলেট, অতিরিক্ত চিজ, ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল অনেকের মাইগ্রেন বাড়িয়ে দিতে পারে। খাবার ট্র্যাক করে দেখুন কোনগুলো আপনার জন্য ট্রিগার।
১০. ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান
গাঢ় সবুজ শাকসবজি, বাদাম, গোটা শস্য ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস। এটি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের আগেই ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে সাপ্লিমেন্ট নিতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
১১. আকুপ্রেশার
বুড়ো আঙুল ও তর্জনীর মাঝখানে থাকা এল আই-ফোর পয়েন্টে ২–৩ মিনিট চাপ দিন বা হালকা ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন কয়েকবার করলে মাইগ্রেন উপশমে সহায়ক হতে পারে।
মনে রাখবেন:
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো শুধু সাময়িক স্বস্তি দেয়। যদি মাইগ্রেন ঘনঘন বা খুব তীব্রভাবে ফিরে আসে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।