ক্যারাম খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলার দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ভৈরব উপজেলার আতকাপাড়া ও পাশ্ববর্তী কুলিয়ারচর উপজেলার ষোলরশি গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের ষোলরশি গ্রামের কয়েক যুবক ক্যারাম খেলতে যান পাশ্ববর্তী ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আতকাপাড়া গ্রামে। সেখানে ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে আতকাপাড়া গ্রামের লোকজনের সাথে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে ষোলরশি গ্রামের যুবকদের মারধর করে আতকাপাড়া গ্রামের লোকজন। পরে এ নিয়ে আজ সকালে আবার তর্কাতর্কি হলে এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ জড়ায়। এতে কমপক্ষে ২০ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনায় আহত ষোলরশি গ্রামের মোঃ রিপন বলেন, ঘটনা কি নিয়ে আমি জানি না, আমি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম হঠাৎ কিছু লোকজন এসে আমাকে মারধোর করে।
ষোলরশি গ্রামের আহত শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্যারাম খেলা নিয়ে সংঘর্ষ। খবর পেয়ে বাড়ি থেকে ছুটে আসি, এসে দেখি ভৈরবের লোকজন আমাদের এলাকায় উঠে পড়ছে। এসময় ইটের আঘাতে আমার মাথা ফেটে যায়।
ভৈরব আতকাপাড়া গ্রামের মো রবিন বলেন, ক্যারাম খেলা নিয়ে রাতে তর্কাতর্কি হয়। সেই তর্কাতর্কি পর সকালে কুলিয়ারচরের ষোলরশি গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষনা দিয়ে সংঘর্ষ জড়ায়।
ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে এসে দেখি পরিস্থিতি শান্ত আছে। আর যেনো কোন ঘটনা না ঘটে এ জন্য জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি এবং কমিটি ঘটন করে দিয়েছি কুলিয়ারচরে। তারা এ বিষয়ে স্বীদ্ধান্ত নিবেন কীভাবে সমাধান করা যায়।
কুলিয়ারচর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, ঘটনার পর ভৈরব ও কুলিয়ারচর দুই থানার পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমার উভয় থানার ওসি ও কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে, বিষয়টি সমাধানের জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এবং পরবর্তীতে যেনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এজন্য ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে।
কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, সামান্য একটি ইস্যু নিয়ে এভাবে সংঘর্ষে জড়ানো খুবই দুঃখজনক বিষয়। গতরাতের একটি ক্যারাম খেলা নিয়ে দুই উপজেলার মধ্যে এরকম একটি ঘটনা ঘটে। আমাদের এ তরুন সমাজ যেখানে দেশ গঠনে, এ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখার কথা ছিলো সেখানে তারা খেলাধুলা নিয়ে এরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এখানে দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপস্থিতে একটি কমিটি করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আবার সংঘর্ষে জড়াই তবে কঠিন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুস সাকিব এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে ভৈরব ও পাশ্ববর্তী কুলিয়ারচর উপজেলার দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রাথমিকভাবে হতাহতের পরিমাণ জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।