বিদেশি কর্তৃত্বের প্রতিবাদে দুর্গাপুরে সিপিবির বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল

চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণা এবং তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’-এর নামে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে লাল পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
সিপিবির কেন্দ্র ঘোষিত ২৩ ও ২৪ মে’র দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে দুর্গাপুর উপজেলা কমিটির আয়োজনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে সিপিবির নেতাকর্মীরা লাল পতাকা হাতে নানা স্লোগানে মুখরিত করেন পুরো শহর। “সাম্রাজ্যবাদের দালালি চলবে না”, “মানবিক করিডোরের নামে চক্রান্ত রুখে দাও”, “বিদেশি কর্তৃত্ব নয়, জনগণের অধিকার চাই”—এমন নানা শ্লোগানে প্রতিবাদ জানানো হয়।
মিছিল শেষে কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘরের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় এক প্রতিবাদ সমাবেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সিপিবি নেতা কমরেড শামছুল আলম খান এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুপন কুমার সরকার।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জননেতা ডা. দিবালোক সিংহ। তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ চরম হুমকির মুখে। চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটি কৌশলগত স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জাতির জন্য আত্মঘাতী। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে পরিণত করা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির একটি ঘাঁটিতে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ। তিনি বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী। তথাকথিত মানবিক করিডোরের নামে আমাদের ভূখণ্ডকে অন্যের যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করার চক্রান্ত দেশের মানুষের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনবে।”
নেত্রকোণা জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম বলেন, “দেশের জনগণের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এটা গণতান্ত্রিক নীতির পরিপন্থী এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বক্তারা দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। পুরো কর্মসূচিতে ছিল উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং প্রতিবাদের চেতনা।