জয়া আহসান: গর্ভে নয়, হৃদয়ে সন্তান চাই

তিন দশক ধরে অভিনয়ের ভুবনে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে তুলেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। দেশে যেমন, তেমনি ভারতের কলকাতার চলচ্চিত্রেও তার সরব উপস্থিতি। এক যুগ আগে ‘আবর্ত’ চলচ্চিত্র দিয়ে টালিগঞ্জে যাত্রা শুরু করার পর থেকে নিয়মিতই সেখানকার সিনেমায় কাজ করছেন তিনি।
অভিনয়জীবনের শুরুর দিকে, ১৯৯৮ সালে মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানকে বিয়ে করেন জয়া। তবে ২০১১ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর আর নতুন করে সংসার শুরু করেননি এই অভিনেত্রী। যদিও নিজের জীবনের একটি বড় স্বপ্ন সম্পর্কে এবার সরাসরি মুখ খুললেন তিনি—মা হওয়ার ইচ্ছা, তবে তা দত্তক গ্রহণের মাধ্যমে।
বর্তমানে ‘ডিয়ার মা’ ছবির প্রচারে ব্যস্ত জয়া। এই ছবিতেই উঠে এসেছে “সন্তান গর্ভে না ধরলেও মা হওয়া যায় কি না” এমন একটি সংবেদনশীল প্রশ্ন। ছবির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাস্তব জীবনেও একই ধরনের ভাবনা প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী।
জয়া বলেন, “আমি সন্তান দত্তক নেওয়ার কথা ভেবেছি। বিশ্বাস করি, গর্ভে না এলেও কোনো শিশুকে ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তোলা যায়। আমার ইচ্ছে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকা থেকে শিশুকে দত্তক নেওয়ার। এমনকি আমি ও আমার বোন মিলে এ নিয়ে উদ্যোগও নিয়েছিলাম।”
তবে সে পরিকল্পনায় কিছু জটিলতা ও আইনি প্রক্রিয়ার জট তৈরি হওয়ায় এখনো বিষয়টি বাস্তবায়িত হয়নি।
দম্পতিদের দত্তক নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জয়া আরও বলেন, “যাদের একটি সন্তান আছে, তারা চাইলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সন্তান হিসেবে কেউ একজনকে দত্তক নিতে পারেন। এতে শিশুটির একটি পরিবার হবে, আর পরিবার পাবে নতুন ভালোবাসার মানুষ।”
‘ডিয়ার মা’ ছবিতে জয়া অভিনয় করেছেন এক মায়ের চরিত্রে, যিনি দত্তক নেওয়া সন্তানকে হৃদয় দিয়ে আপন করে নিয়েছেন। চরিত্রটির সঙ্গে নিজের অনুভব মিলিয়ে তিনি বলেন, “আমি নিজেও খুব সংবেদনশীল একজন মানুষ। তাই এই চরিত্রে নিজেকে মেলে নিতে তেমন বেগ পেতে হয়নি।”
জয়া আহসানের এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অনেকে ইতিমধ্যেই প্রশংসা করেছেন। অভিনয়ের বাইরেও সমাজ সচেতনতার দৃষ্টান্ত হিসেবে তার এ ভাবনা নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে অন্যদের জন্যও।