“ভালো দিকগুলোও তুলে ধরুন”—অর্থনীতিবিদদের সমালোচনার জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

সরকারের কার্যক্রম নিয়ে অর্থনীতিবিদদের একপাক্ষিক সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সবকিছুই চোখে দেখা যায় না; দেখতে হলে দরকার অন্তরদৃষ্টি। দেখতে না চাইলে কেউই কিছু দেখতে পায় না।’
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সদর দপ্তরে ২০২৫-২৬ কর বছরের ই-রিটার্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন ও বাজেট সংশ্লিষ্ট পরিবর্তন তুলে ধরতে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। বক্তব্য দেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা।
অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমি ১৯৭০ সাল থেকে শিক্ষকতা করছি, যাঁরা এখন সমালোচনা করছেন—তাঁদের অনেকেই আমার ছাত্র ছিলেন। আমরা ভুল করি, সেটি ঠিক। কিন্তু ভালো কাজগুলো নিয়েও কেউ কিছু বলে না। সমালোচনা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেবল দোষ ধরলেই হবে না, ভালো দিকগুলোকেও অনুপ্রাণিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন কেউ গ্লাসের অর্ধেক খালি দেখে, আমি বলি উপরের অর্ধেকটা পূর্ণ দেখুন। শুরুতেই যদি বলা হয় সবই খারাপ, তবে সেটি ফ্যাসিবাদের মতোই একমুখী দৃষ্টিভঙ্গি।’
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও গণমুখী করার আহ্বান জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার বয়স ৬৫ পার হয়েছে। প্রযুক্তি-নির্ভর কাজ সবসময় সহজ হয় না। মোবাইল মেসেজ, ইমেইল এসব পারলেও অনেক সময় আটকে যাই। তাই চাই প্রযুক্তির ভাষা আরও সহজ হোক, যেন সবাই ব্যবহার করতে পারেন।’
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সূর্যালোকই সবচেয়ে ভালো জীবাণুনাশক। যত কিছু ব্যবহার করি না কেন, দিনের আলোয় সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। আমাদেরও তেমন স্বচ্ছতা দরকার।’
সেমিনারে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, ‘বাজেট পাসের পর রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিলে অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বাজেটের পরপরই গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য একটি ব্রিফিং বা সেমিনার প্রয়োজন, যেন তারা সঠিক তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেন।’
সেমিনারে এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তারাও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আনা আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস সংক্রান্ত পরিবর্তনগুলো তুলে ধরেন।