পারটেক্স কোলের সম্পদ নিলামে তুলল ব্যাংক এশিয়া

পারটেক্স গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পারটেক্স কোল লিমিটেডের বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুলেছে ব্যাংক এশিয়া। প্রায় ১১৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার এই ঋণ পুনরুদ্ধারে ঢাকার মহাখালী শাখা থেকে সম্প্রতি নিলাম আহ্বান করা হয়েছে।
নিলামে তোলা সম্পদের মধ্যে ঢাকা ও গাজীপুরে অবস্থিত ২৫৯ দশমিক ৩৬ শতক জমি ও একটি কারখানার ভবন রয়েছে। নিলাম প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর অধীনে। আগ্রহী দরদাতারা আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত টেন্ডার দাখিল করতে পারবেন।
ব্যাংক এশিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ৯ জুলাই পর্যন্ত পারটেক্স কোলের মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ১১৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ধারাবাহিক নোটিশের পরও ঋণ পরিশোধ না করায় ঋণটি শ্রেণীকৃত হয়েছে। নিলাম নোটিশে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল আজিজসহ আরও কয়েকজন বন্ধকদাতার নাম উল্লেখ রয়েছে। প্রয়াত এম এ হাসেমসহ পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্যদের নামও ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
রুবেল আজিজ বর্তমানে পারটেক্স গ্রুপের পাশাপাশি সিটি ব্যাংকের পরিচালক ও বনানী ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন পারটেক্স বেভারেজ, পারটেক্স প্লাস্টিকস, পারটেক্স জুট মিলস, পারটেক্স অ্যাভিয়েশন এবং পারটেক্স প্রোপার্টিজও দেশে সক্রিয়ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
২০১৫ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা পারটেক্স কোল ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা আমদানি করে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করে থাকে। মূলত ইটভাটা শিল্পকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবসায় প্রবেশ করে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নীতিমালায় উল্লেখ আছে, কোনো ব্যক্তি বা তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে তিনি কোনো ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারবেন না। তবে ঋণ নিয়মিত হলে তিনি পুনরায় পরিচালক হওয়ার যোগ্য হবেন। ইচ্ছাকৃত খেলাপির ক্ষেত্রে তা থেকে মুক্ত হওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত পরিচালকের দায়িত্বে ফেরা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলো নিয়ম মেনে জামানতের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারে এবং খেলাপি ব্যক্তি পরিচালকের পদে থাকলে তা ব্যাংকের নজরে এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ব্যাংক খাত বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের খেলাপি ঋণ এবং পরিচালকদের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিনের একটি নীতিগত দুর্বলতা। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এসব বিষয়ে আরও কার্যকর ও কঠোর হতে হবে বলেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রুবেল আজিজের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফোনে কল করা ও বার্তা পাঠানো হলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি।