যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে চাপে বাংলাদেশ: সেলিম রায়হান

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের কৌশলগত প্রস্তুতির ঘাটতির সমালোচনা করেছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তাঁর মতে, বিশ্বায়নের বর্তমান পর্বে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারত্ব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও, বাংলাদেশ দর-কষাকষিতে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে।
রোববার (২০ জুলাই) ঢাকায় প্রথম আলো আয়োজিত ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও গবেষকরা অংশ নেন।
সেলিম রায়হান বলেন, “বাংলাদেশের দর-কষাকষির অভিজ্ঞতা নেই। পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে আমাদের অবস্থান হতাশাজনক। মালয়েশিয়ার মতো দেশ এনডিএ সত্ত্বেও অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা করছে, অথচ আমরা নীরব।”
তিনি আরও বলেন, “ভূরাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ একটি জটিল অবস্থানে আছে—চীনের সঙ্গে সম্পর্ক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ভারতের সঙ্গে রয়েছে সংবেদনশীলতা। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূকৌশলগত অবস্থানের সঙ্গে ভারস্য বজায় রাখাও জরুরি।”
যুক্তরাষ্ট্রে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে সেলিম রায়হান বলেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত রপ্তানিনির্ভর শিল্পে বড় প্রভাব ফেলবে। ৩৫ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব ইতোমধ্যে উদ্বেগের বিষয়। চীনের কিছু পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে, বাংলাদেশের হারও কাছাকাছি।”
ডব্লিউটিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ শক্তিধর দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে দ্বিপক্ষীয় পথে এগোচ্ছে। বাংলাদেশের উচিত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় কূটনৈতিকভাবে নিজ অবস্থান জোরদার করা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এখন এই প্রশ্ন—আমরা যুক্তরাষ্ট্রে কোন কোন খাতে ইতিবাচক অবস্থান নিতে পারি, এবং আমাদের ভূরাজনৈতিক সুবিধাগুলো কিভাবে কাজে লাগানো যায়।”