বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে দুর্নীতির তদন্তে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত এবং প্রধান উচ্ছেদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যে এসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত নথিপত্র তলব করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
তলবকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন:
প্রধান উচ্ছেদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস, েসার্ভেয়ার তাপস, নাছির, মশিউর, আর্কিটেক্ট সাইদুর, জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল, প্রশাসনিক কর্মকর্তা লকিতুল্লাহ, সম্পত্তি শাখার ফিরোজ ও শাকিল, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, প্লান শাখার লোকমান ও কালটু, বাজার সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলাম, ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেন্ডেন্ট আজিজুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী এইচএম কামাল, সাইফুল ইসলাম মুরাদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির, সাবেক সচিব মাছুমা আক্তার
দুদক কর্তৃক তলবকৃত নথির মধ্যে রয়েছে:
সংশ্লিষ্ট ১৮ কর্মকর্তার নাম, পদবি, ঠিকানা, এনআইডি, মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য
তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র
সাবেক মেয়রের আমলে দীঘির মালিকানা ও বালু ভরাট সংক্রান্ত কাজের রেকর্ড
ঈদের ব্যানার তৈরির ১৩ লাখ টাকা ও ফেসবুক পেজ বুস্টিং বাবদ ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচের রেকর্ড
মেয়রের ব্যবহৃত আইটি সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০ লাখ টাকার খরচের হিসাব
দুদক পরিচালক মোজাহার আলী সরদার বলেন, “সাবেক মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। প্রাথমিকভাবে নথি সংগ্রহের কাজ চলছে। এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।”
স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির অন্যতম সহযোগী হওয়ার অভিযোগ। পরিসংখ্যানবিদ হয়েও তিনি উচ্ছেদ শাখার প্রধান হিসেবে এবং অতিরিক্তভাবে বর্জ্য বিভাগের দায়িত্বও পালন করছিলেন। তিনি ২০২১ সালের বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সিটি কর্পোরেশনের সংঘর্ষে এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। যদিও একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে দুদকের চিঠি পেয়েছি এবং চাহিদাকৃত নথি সরবরাহ করবো। তবে অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।”
অভিযোগ অনুযায়ী, সাবেক মেয়রের নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। ঘুষ, অবৈধ নিয়োগ, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অর্থ লোপাটসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন কর্মকর্তারা। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে নিয়মিত আদায় করা হতো অতিরিক্ত অর্থ।