বাবার লাশ ঘরে, স্বপ্ন হাতে পরীক্ষাকক্ষে সাহসী কন্যা

চোখে অশ্রু, হৃদয়ে গভীর শোক—তবু দায়িত্ববোধে অবিচল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছভুক্ত স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় এমন এক হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনা আবেগে ভাসিয়েছে শিক্ষক-পরিদর্শকদের।
শুক্রবার (২ মে) অনুষ্ঠিত ‘বি ইউনিট’ ভর্তি পরীক্ষার সময় পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করেই এক ছাত্রীকে দেখিয়ে প্রধান পরিদর্শক বলেন, “এই মেয়েটির বাবা আজ সকালেই মারা গেছেন। এখনও দাফন হয়নি, তবু সে পরীক্ষা দিতে এসেছে।
ঘটনাটি মুহূর্তেই কক্ষজুড়ে আবেগের সঞ্চার করে। কেউ কেউ চোখের জলও আটকে রাখতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক ড. হাবিবুর রহমান সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “মুহূর্তেই দায়িত্ব ভুলে গিয়েছিলাম। আমি তখন শুধু একজন মানুষ। বুকের ভেতর কেঁপে উঠেছিল। এমন মানসিক দৃঢ়তা, এমন আত্মত্যাগ—শুধু একজন সত্যিকারের যোদ্ধার মধ্যেই দেখা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “শোক সত্ত্বেও পরীক্ষায় অংশ নেওয়াটাই তার বাবার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা এবং নিজের ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকার।”
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিম নুর মিম বলেন, “আল্লাহ বোনটিকে উত্তম প্রতিদান দিন, তাঁর বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। সেই স্বপ্নবাজ যোদ্ধার স্বপ্ন যেন সেশনজটের অভিশাপে থেমে না যায়।”
সামাজিক মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-সহকর্মীরা সাহসী ওই কন্যার প্রতি শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি শুধুই একজন পরীক্ষার্থী নন—তিনি এই সময়ের সাহসী মুখ, যিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে চলার অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন।