প্রেমিকার ঘরের বারান্দা থেকে কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রেমিকার ঘরের বারান্দা থেকে মিজানুর রহমান নামে এক কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের একদিন পর তা হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে পরিবার। এমনকি এ ব্যাপারে মিজানুরের আপন মামা নূরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। মিজানুর বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মোদাহরপুর গ্রামে মিজানুরের আরেক আপন মামা আবুল হোসেন মিজানুরের লাশ সামনে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেন।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে একই গ্রামের নূরুল ইসলামের বসতঘরের বারান্দা থেকে মিজানুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মিজানুরের লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়। যাতে তার মৃত্যুর জন্য জুলিফিকার আলী ভুট্টো, নূরুল ইসলাম, বিউটি আক্তারসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। আর ঘটনার পর থেকেই নূরুল ইসলামসহ তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।
মিজানুরের মামা আবুল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার ভাই নূরুল ইসলামের বড় মেয়ে বিউটি আক্তারের সাথে মিজানুরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি বিউটির বাবা মা জানতে পেরে সপ্তাহখানেক আগে মিজানুরকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে মিজানুর ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। এর দুইদিন পর মিজানুর রহমানকে আসামি করে নূরুল ইসলাম ধর্মপাশা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। আর বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য মোদাহরপুর গ্রামের জুলফিকার আলী ভূট্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে মিজানুরের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। আর এমন বিষয় সইতে পেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে পরে মিজানুর কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে শুক্রবার সকালে নূরুল ইসলামের ঘরের বারান্দা থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আবুল হোসেন আরও বলেন, আমাদের ধারনা মিজানুরকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়ের (বিউটি) বাড়িতে ডেকে নেয় এবং মারধর করে মিজানুরকে হত্যা করে মেয়ের (বিউটির মা) শাড়ি দিয়ে মিজানুরকে ঝুলিয়ে রাখে। পরে তা আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। পরে মিজানুরের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ ও ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক মামলা নেয়নি। এদিকে ময়নাতদন্তের পর শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মিজানুরের লাশ তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।
অভিযুক্ত নূরুল ইসলামসহ তার পরিবারের সকলেই পলাতক থাকায় কারও বক্তব্য জানা যায়নি। এমনকি শনিবার সংবাদ সম্মেলনের পর নূরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
তবে অভিযুক্ত জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেন, আমি কোনো টাকা দাবি করিনি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। প্রতিহিংসাবশত আমার নাম জড়ানো হচ্ছে।
ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এক বিষয়ে দুটি মামলা হয়না। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যা প্রমাণিত হলে মামলা নেওয়া হবে।