একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম ব্যবহারে বিটিআরসির নতুন নির্দেশনা, ৬৭ লাখ সিম নিষ্ক্রিয় হবে

একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিম ব্যবহার করতে পারবেন—এমন বিধি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৫ আগস্ট থেকে এ সীমা কার্যকর হবে। বর্তমানে যেসব গ্রাহকের নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে।
এই সিদ্ধান্তে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহক এবং তাদের নামে থাকা ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম প্রভাবিত হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে অতিরিক্ত সিমধারী গ্রাহকদের একটি তালিকা পাঠানো হবে। এরপর অপারেটররা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাইবে, কোন ১০টি সিম তারা রাখতে চান।
সিম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেসব নম্বর থেকে বেশি কল বা ডেটা ব্যবহার হয় কিংবা যেগুলো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, নগদ, রকেট) সঙ্গে যুক্ত, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিটিআরসি ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে মোবাইল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নির্দেশনা পাঠাবে।
এর আগে ২০১৭ সালে বিটিআরসি একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহারের সীমা নির্ধারণ করেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিম জালিয়াতি, প্রতারণা, ভুয়া নিবন্ধন, অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সরকারী কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা করার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সীমা আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ২৪ জুন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের দশম সভায় একাধিক কড়াকড়ি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সভায় প্রতি বছর সিম নবায়নের বিষয়েও আলোচনা হয় এবং বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও বিটিআরসিকে।
বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত প্রকৃত মোবাইল গ্রাহক আছেন প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লাখ।
এর মধ্যে—
৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহকের নামে ৫টির কম সিম রয়েছে
১৬.২৩ শতাংশ গ্রাহকের নামে ৬–১০টি সিম
আর মাত্র ৩.৪৫ শতাংশ গ্রাহকের নামে রয়েছে ১১–১৫টি সিম
সুতরাং, বিটিআরসির ধারণা—এই নতুন সীমা বেশিরভাগ গ্রাহকের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।
সক্রিয় সিমের সংখ্যা ও বাজার পরিস্থিতি
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ কোটি ৬২ লাখ সক্রিয় সিম রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ সিম ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নতুন সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সিম নিষ্ক্রিয় করার আগে গ্রাহকদের মতামত অগ্রাধিকার পাবে এবং অপারেটরদের মাধ্যমে প্রচার ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হবে।