অফারে পাওয়া পশু কোরবানি করা যাবে কি না?

কোরবানির সময় নানা কৌশনে ক্রেতাদের আকর্ষণের চেষ্টা করেন বিক্রেতা ও বিভিন্ন কোম্পানি। অনেকেই ফ্রিজ, টিভি বা এ জাতীয় কোনো পণ্য কিনলে তার সঙ্গে গরু বা কোরবানী করা যায় এমন কোনো পশু অফার করেন। এ জাতীয় অফারে পাওয়া গরু দিয়ে কোরবানি দেওয়া বৈধ হবে কি?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, এ জাতীয় অফারে পাওয়া পশু দিয়ে কোরবানি আদায় করা যাবে কিনা তা বুঝার জন্য আরেকটি বিষয় জানতে ও বুঝতে হবে । আর তা হলো— অফার গ্রহণ করা বৈধ কিনা?
ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী দুই শর্তে অফার গ্রহণ করা বৈধ হবে—
১. অফারের কারণে পণ্যের দাম বাড়ানো যাবে না।
২. শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় পণ্য ক্রয় না করা।
অর্থাৎ পণ্য উদ্দেশ্য না হয়ে বরং পুরস্কার মূল উদ্দেশ্য- এমন হওয়া যাবে না।
ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী বাণিজ্যনীতি হল— পণ্যের দাম সুনির্ধারিত থাকা এবং মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা। তা না করে মূল্যের কিছু অংশ পুরস্কারের নামে লটারীর সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা, লাখ টাকা/কোটি টাকার লোভ দেখিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা ইসলামী বাণিজ্যনীতি পরিপন্থী।
পুঁজিবাদের আবিষ্কৃত এসব নীতি বাজারকে অসাধু পন্থায় প্রভাবিত করে থাকে। মুসলমানদের উচিত এমন কাজ থেকে বিরত থাকা।
উপরোক্ত শর্তগুলো (অফারের কারণে পণ্যের দাম না বাড়ানো এবং শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় পণ্য ক্রয় না করা।) পাওয়া গেলে অফারের অফারে পাওয়া গরু বা পশু গ্রহণ করা বৈধ হবে।
আর কোরবানির জন্য কোনো পশু কিনলে বা ক্রয়ের মাধ্যমে কোনো পশুর মালিক হলে যেমন তা দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয়, উপহারের মাধ্যমে কোনো কোরবানির উপযুক্ত পশুর মালিক হলে তা দিয়েও কোরবানি শুদ্ধ হবে।
হানাফি ফিকহের প্রসিদ্ধ কিতাব বাদায়িউস সানায়ে-এ বলা হয়েছে, যদি কেউ কাউকে ছাগল উপহার দেয় এবং সে ওই ছাগলটি দিয়ে কোরবানি করে, তাহলে এটা তার জন্য বৈধ হবে। কেননা উপহার পাওয়ার এবং হাতে আসার মাধ্যমে সে ওই পশুটির মালিক হয়ে গেছে যেমন কেউ ক্রয় করলে মালিক হয়ে যায়। (বাদায়িউস সানায়ে ৬/৩১৯)
উপরোক্ত শর্তগুলো না পাওয়া গেলে অফারে ক্রয় বৈধ হবে না। এমনকি অফারে পাওয়া গরুরও মালিক হবে না। তা দিয়ে কোরবানি বৈধ হবে না।
তথ্য সুত্র : মাআলিমুস সুনান-৩/৪০০,ফিকহুন নাওয়াযিল -৩/১১৬ ,বহুস ফি কাযাইয়া- ২/১৫৮
