ময়মনসিংহে দুদকের অভিযান, ভোগান্তি কমল যাত্রীদের

টিকিট কালোবাজারীসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের অভিযান পরিচালনা করেছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া দুদকের অভিযান শেষ হয় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলু মিয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেন। তারা টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম তদারকি করে অনিয়মের কথা জানান।
অভিযানের সময় রেলওয়ে স্টেশন সুপারিন্টেন্ডেন্ট নাজমুল হক খান উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান চলাকালীন সময়ে দ্রুত টিকিট ও কাঙ্ক্ষিত আসন পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনের যাত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, প্রতিদিন টিকিট পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আজকে যখন দুদক অভিযানে আসে তখন দ্রুত যাত্রীদের টিকিট দেয়া হয়। সাধারণত দুইটা টিকিট কিনলে একটি আসন পাওয়া কিন্তু একটি টিকিট কিনে একটি আসনই পেয়েছি। আমরা চাই এমন অভিযান অব্যাহত থাকুক।
শফিকুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত মহুয়া কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৪৫ টাকা। সেখানে তারা ভাঙতি নেই বলে নেন ৫০ টাকা। ৫ টাকা ফেরত চাইলে তারা খারাপ আচরণ করেন। আর কোনদিন এক টিকিট খেটে সিট পাওয়া যায় না। এটা কেমন নিয়ম তা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
মহুয়া কমিউটার ট্রেনের বুকিং ক্লার্ক সাইদুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ ভাড়া ৪৫ টাকা কিন্তু অনেক সময় ভাঙা না থাকার কারণে ৫০টাকা রাখা হয়। দুদক অভিযান করে কিছু পায়নি। তারা আমাদের সতর্ক করেছেন।
রেলওয়ে স্টেশন সুপারিন্টেন্ডেন্ট নাজমুল হক খান বলেন, ময়মনসিংহ হতে ২৮ জোড়া ট্রেনের মধ্যে ২৩ জোড়া চলাচল করছে। বাকিগুলো করোনা ও ইঞ্জিন সমস্যার কারণে বন্ধ রয়েছে। ৪-৫ হাজার যাত্রী প্রতিদিন ট্রেনে চলাচল করে। যাত্রী সেবার মান নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, দুদকের অভিযানকে স্বাগত জানাই। সেবা দিতে গিয়ে কারো যদি গাফিলতি থাকে তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবে। তবে ই টিকেটিংয়ের কারণে কালোবাজারি খুব একটা হয় না।
দুদক ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলু মিয়া বলেন, ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীদের সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত কয়েক দিন ধরে রেলওয়ে স্টেশনে আমাদের নজরদারি বাড়ানো হয়। অভিযানে
টিকিট বুকিং সহকারী রাজীব সরকার এবং সোহেল রানার মুঠোফোনে টিকিট খেটে রাখার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও মহুয়া কমিউটার ট্রেনে টিকিট প্রতি ৫ টাকা বেশি নেওয়ারও সততা পাই। কমিউটার ট্রেনের এজেন্ট জিল্লুর রহমান যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার কারণে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। আমাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
