রহস্যময় লাল দাগে ভাইরাল ‘এস লাইন’: প্রেম, গোপনতা আর এক নতুন ট্রেন্ড

একটি লাল দাগ না, এটি কোনো সাধারণ দাগ নয়। বরং এটি এখন সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তারকা থেকে সাধারণ মানুষ—সবাই যেন এই লাল রেখায় মজেছেন। গ্রুপ ফটো, সেলফি, এমনকি পুরনো প্রেমের ছবি—সব কিছুর ওপর আঁকা হচ্ছে এক রহস্যময় লাইন, যা এক অনন্য ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।
নেটমাধ্যমে মিম পেজগুলোতে চলছে একের পর এক পোস্ট, ট্রোল, কৌতূহলী মন্তব্যের বন্যা। কেউ খুঁজছেন এর পেছনের ‘কনটেক্সট’, আবার কেউ ঠাট্টার ছলে লাইন টানছেন সালমান খানের পুরনো প্রেমের ছবিতে। অথচ এর পেছনে রয়েছে এক কোরিয়ান ওয়েব সিরিজ—‘এস লাইন’—এর চমকপ্রদ প্রভাব।
১১ জুলাই কোরিয়ার স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ওয়্যাভ-এ মুক্তি পাওয়া ‘S Line’ সিরিজের মূল চরিত্র হিউন ইওপ—এক রহস্যময় তরুণী, যে মানুষের মাথার ওপর এক লাল রেখা দেখতে পায়। সেই লাইন স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে কে কার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছে।
গল্প মোড় নেয় আরও গভীরে, যখন বিশেষ এক চশমার মাধ্যমে আরও কিছু মানুষ এই লাইন দেখতে শুরু করে। সমাজে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা, ভেঙে পড়ে সম্পর্কের গোপনতা ও নৈতিকতার প্রাচীর। শিক্ষক, পুলিশ, রাজনীতিক—কেউই বাদ যান না এই ‘সত্যরেখা’র হাত থেকে।
‘এস লাইন’ মূলত বিখ্যাত ওয়েবটুন নির্মাতা কোমাবি-র ‘ডেথ ট্রিলজি’-র শেষ কিস্তি। এর আগে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘আ কিলার প্যারাডক্স’ ও ‘আনরিজলভড’। তবে ‘এস লাইন’ এক ভিন্ন মাত্রা এনেছে সম্পর্ক, ব্যক্তিগত গোপনতা এবং সমাজের মূল্যবোধ নিয়ে।
নেটিজেনদের চোখে ‘এস লাইন’ শুধু থ্রিলার নয়, এক নতুন অভিজ্ঞতা। পুরনো প্রেমিক বা প্রেমিকার ছবিতে লাল দাগ এঁকে তারা পোস্ট করছেন নানা ব্যঙ্গাত্মক ক্যাপশনসহ। বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের ছবি তো ভাইরাল হতেই বাধ্য—একটি লাইন গিয়ে ঠেকছে ক্যাটরিনা, ঐশ্বরিয়া, সংগীতা বিজলানি, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ পর্যন্ত!
একজন লিখেছেন—“এস লাইন যদি সত্যি হতো, তাহলে স্কুল রিইউনিয়নে কতটা বিশ্রী পরিস্থিতি হতো ভাবতেই ভয় লাগে!”
আরেকজন বলছেন, “আমার এক বন্ধুর লাল দাগ এত জটিল, মনে হচ্ছে রুট ম্যাপ!”
‘এস লাইন’ আমাদের চিন্তার জগতে প্রশ্ন তুলেছে—গোপনতা মানেই কি অন্যায়? সত্য প্রকাশের স্বাধীনতা কি সবসময় কাম্য? সম্পর্ক কি কেবল আবেগের, নাকি সমাজে তার অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ?
একটি কল্পনাপ্রসূত লাল দাগ হয়তো আজ মজার খোরাক, তবে তার পেছনে রয়েছে সম্পর্কের জটিল সত্য, যা ভাবতে বাধ্য করছে সবাইকে।