কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত ৯৫০ কেজির ‘কালো মানিক’

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পিয়াজচর গ্রামের মো. আক্কাছ আলীর খামারে হয়েছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী গরু। কুচকুচে কালো ও বিশাল আকৃতির গরুটির ওজন প্রায় ৯৫০ কেজি। গরুটি যেমন বলবান, তেমনি তার তেজ। গায়ের রং কালো-সাদা ছোপযুক্ত এবং নবাবী আচরণের জন্য মালিক মো. আক্কাছ আলী আদর করে নাম রেখেছেন ‘কালো মানিক’।
সরজমিনে "ভাই ভাই ক্যাটেল ফার্ম" খামারে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির ষাঁড়, কালো মানিকসহ তার খামারে ১৮টি গরু রয়েছে। এরই মধ্যে গরুটি জেলা পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশাল আকৃতির গরুটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা ও বিভিন্ন পর্যায়ের গরু ব্যবসায়ীরা। বিশাল গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ৮ লাখ টাকা।
মো. আক্কাছ আলীর ছেলে ডাক্তার মো. রবিন বেপারী জানান, আমাদের কালো মানিক হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান (অস্ট্রেলিয়ান) জাতের গরু। নিজেদের খামারেই এই গরুর জন্ম। এরপর দীর্ঘ আড়াই বছর যাবৎ ফার্মে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে গরুটিকে। কালো মানিকের দৈহিক গঠন যেমন চমকপ্রদ, তেমনি তার স্বভাবও আলাদা। শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান এই গরুটিকে সামলাতে কখনো কখনো লেগে যায় ৫ থেকে ৮ জন লোক।
তিনি আরও জানান, ১৮টি গরুর মাঝে কালো মানিকই সবচেয়ে বড়।এছাড়া কোরবানির হাটে বিক্রয়ের জন্য আরও ৭টি ষাড় গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। ফার্মে প্রথমেই আলাদাভাবে পরিচর্যা করা হয় তাকে। কালো মানিকের খাদ্য তালিকায় রয়েছে শুকনো খড় ও ভুষি। সেই সঙ্গে খৈল, পায়রা ও ভুট্টা রয়েছে। তার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ৫০-৬০ কেজি কাঁচা ঘাসও রয়েছে। গরমের মধ্যে তাকে গোসল করানো হয় দিনে দুই থেকে তিনবার।
গরুটির মালিক আক্কাস বেপারী জানান, কালো মানিকের যত্নে কোনো কমতি রাখা হয়নি। সন্তানের মতো লালন-পালন করা হয়েছে। ওর গায়ে এক ফোঁটা কৃত্রিম উপাদান তথা কোনো মোটাজাতকরনের ইঞ্জেকশন ব্যবহার করিনি। গরুটিকে খাওয়ানো হয় শুধু প্রাকৃতিক খাবার। কোনো রকম কৃত্রিম ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। ফলে কালো মানিক এখন সুস্থ, সবল এবং আকর্ষণীয় এক পশুতে রূপান্তরিত হয়েছে। এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য তাকে প্রস্তুত করছি। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এটি আমি বিক্রি করতে চাই।
তিনি বলেন, ‘আমি কালো মানিককে বিক্রির জন্য ৮ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। ইচ্ছা আছে ভালো ক্রেতা পেলে বাড়ি থেকে দাম কম-বেশি করে বিক্রি করে দেব। আল্লাহ যার ভাগ্যে রেখেছেন, তিনিই কালো মানিককে নিয়ে যাবেন। কেউ চাইলে আমার সঙ্গে মোবাইলে ০১৮৭৪৩৩৬২০১ যোগাযোগ করেও আসতে পারেন।’
হরিরামপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আশা করছি উপজেলার খামারিরা এ বছর পশুর ভাল দাম পাবেন। যতটুকু জানতে পেরেছি, দেশের বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানি হচ্ছে না এ বছর। উপজেলার হাটগুলোতে খামারি ও ব্যবসায়ীদের পশুর সুবিধার্থে আমাদের চিকিৎসক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্রেতারাও তাদের সামর্থের মধ্যে পছন্দমত কোরবানির প্রাণী ক্রয় করতে পারবেন। খামারিরা যাতে তাদের কোরবানির প্রাণী সহজে বিক্রি করার জন্য কোরবানির হাটে যেতে পারেন এবং বিক্রি করে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন, সে বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে অনুরোধ করছি।’