অবশেষে পটিয়ার ওসি জায়েদ নুরকে প্রত্যাহার

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নুরকে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) টানা চাপ ও ৯ ঘণ্টার সড়ক অবরোধের পর বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
এর আগে, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। একই দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীর জাকির হোসেন সড়কে ডিআইজি অফিসের সামনেও এনসিপি নেতাকর্মীরা অবরোধ করেন। অবরোধের ফলে দুইপাশে তীব্র যানজট ও চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে, যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের নেতা দীপংকর তালুকদার (২৯)-কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, ওসি জায়েদ নুর তাকে গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন এবং পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডা ও লাঠিচার্জ করেন।
এই লাঠিপেটার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকীসহ অন্তত ২৩ জন আহত হন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশের আচরণ ছিল পক্ষপাতদুষ্ট এবং ওসি সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিতেন, তাদের গ্রেপ্তারে অস্বীকৃতি জানাতেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ-ওসি জায়েদ নুর আওয়ামী লীগের প্রকৃত দোসর। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। আমরা যখন নিজ উদ্যোগে একজনকে আটক করে দিই, তখন তিনি তালবাহানা শুরু করেন। উপরন্তু আমাদের লাঠিপেটা করেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে থানার সামনে ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ শুরু হয়। আট ঘণ্টা পর, ওসি প্রত্যাহারের আশ্বাস পেয়ে সন্ধ্যায় অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, ওসি জায়েদ নুরকে আপাতত চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।