জুলাই আন্দোলনের ৯ মাস পর শেখ হাসিনাসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

জুলাই আন্দোলনের ৯ মাস পর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নিহত তরুণ সজল মিয়া (২০)-কে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৬২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন নিহত সজলের মা রুনা বেগম। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনূর আলম মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
গত ১৬ মে রাতে দায়ের হওয়া মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সজল মিয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। এ সময় অভিযোগে নাম থাকা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অস্ত্রসহ জনতার ওপর হামলা চালান এবং এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন। গুলিবর্ষণে সজলের পেটে গুলি লাগে এবং পরবর্তীতে চিটাগাং রোডের সুগন্ধা হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
রুনা বেগম মামলায় বলেন,আমার ছেলে কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সে শুধু সাধারণ মানুষের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমার সন্তানকে গুলি করে হত্যা করেছে।
এই মামলায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখযোগ্যভাবে অভিযুক্ত হয়েছেন:
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি একেএম শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু
সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী
শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমান
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা মজিবুর রহমান, হাজী ইয়াছিন মিয়া, তাজিম বাবু
শাহ নিজাম এবং সেভেন মার্ডার মামলার নজরুল ইসলামের শ্যালক শফিকুল ইসলাম
এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম বলেন,বাদী দাবি করেছেন, শোক ও নিরাপত্তার কারণে এতদিন মামলা করতে পারেননি। এখন গেজেটে নিহতের নাম আসার পর সাহস পেয়েছেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে।
এটি জুলাই আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনার প্রথম আনুষ্ঠানিক হত্যা মামলা, যা রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
