ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন নিয়ে অনিশ্চয়তায় বিএনপির মিত্ররা, আশ্বাস চায় মজবুত সমঝোতার

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ত্বরান্বিতভাবে। ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চলছে উঠোন বৈঠক, জনসমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি। তবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দল ও জোটনেতারা এখনও তাদের নির্বাচনি আসন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও মিত্র দলের অনেকেই এখনই বিএনপির কাছ থেকে ‘আসন সমঝোতার’ নিশ্চয়তা চেয়ে বসেছেন।
বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঐক্যের কারণে মিত্র দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত, তবে তারা অন্ততপক্ষে ‘সম্মানজনক’ আসনের আশ্বাস পেলে কাজ শুরু করতে রাজি। এছাড়া তারা ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকারের উচ্চকক্ষেও স্থান চায়। এই ব্যাপারে বিএনপি ও মিত্র দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতা ও বিষয়ভিত্তিক আলাপ-আলোচনা চলছে, যদিও তা বেশির ভাগ সময় নীরব রয়েছে।
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির চলমান বৈঠকে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পর আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলোচনা করা হবে। এখনো সেই পর্যায়ে আসা হয়নি।
তিনি বলেন, “যখনই নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হবে, তখনই এসব বিষয় উঠে আসবে। আমরা সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব। যারা রাজপথে আমাদের সঙ্গে ছিল, তাদের সঙ্গে পুনরায় কথাবার্তা বলছি। আমাদের ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
আমির খসরু আরও বলেন, “শুধু নির্বাচনই নয়, ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করাও আমাদের লক্ষ্য। জনগণ যদি আমাদের রায় দেয়, সবাই মিলে এগিয়ে যেতে হবে।”
২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও তার মিত্ররা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মিত্রদের ৫৮টি আসন দেয় বিএনপি, যদিও নির্বাচনের দিন ভোট বর্জন ঘোষণা করে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে ও তারা অংশগ্রহণ করেনি। এই দীর্ঘ সময় আন্দোলনে সক্রিয় থেকেও আসন নিয়ে নিশ্চিততা না পাওয়ায় অনেকে দ্বিধায় রয়েছেন।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় শক্তিশালী করতে কাজ করবে যাতে ঐক্যের মধ্য দিয়ে নির্বাচনি লড়াই এগোয় এবং সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমবেত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।