বিমানবন্দরে গুলির ম্যাগাজিন নিয়ে উপদেষ্টার যাত্রা: প্রশ্নে ভিআইপি নিরাপত্তা প্রোটোকল

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের যুব উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার হাতব্যাগে স্ক্যানারে গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন শনাক্ত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিতর্ক তৈরি হয়েছে দেশের নিরাপত্তা ও বিমানবন্দর চেকিং প্রোটোকল ঘিরে। যদিও আসিফ মাহমুদ ঘটনাটিকে 'ভুলবশত' বলে দাবি করেছেন, তবুও বিশেষ সুবিধায় ভিআইপি যাত্রীদের স্ক্যানিং এড়ানোর সুযোগ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
ঘটনাটি ঘটে রোববার ভোরে, যখন তিনি মরক্কোর মারাকেশে ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে’ যোগ দিতে ঢাকা ছাড়েন।
স্ক্যানিংয়ের সময় তাঁর হাতব্যাগে একটি গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন ধরা পড়ে। এরপর তিনি নিজেই সেটি তাঁর প্রটোকল কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন এবং ফ্লাইটে ওঠেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্ক্যানিং মেশিনে শনাক্ত হওয়ার আগে তিনি একাধিক চেক পয়েন্ট পার হয়ে গিয়েছিলেন।
ভিআইপি টার্মিনালের প্রথম চেকিংয়ে এটি ধরা পড়েনি কেন?
লাইসেন্সধারী হলেও, আগ্নেয়াস্ত্র বা গুলির বিষয়ে আগাম ঘোষণা না দিলে আইনি ব্যবস্থা হওয়ার কথা—অথচ এখানে হয়নি কেন?
একই অপরাধে অন্যদের আগে গ্রেফতার করা হলেও তাঁর ক্ষেত্রে ছাড় কেন?
বাংলাদেশের অস্ত্র নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্সধারী কেউ বিমানবন্দরে অস্ত্র বা গুলি নিয়ে গেলে সেটি আগাম ঘোষণা করতে হবে। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। অতীতে যশোর ও সাতক্ষীরার দুই রাজনৈতিক নেতা একই কারণে গ্রেফতার হন।
একাধিক এভিয়েশন বিশেষজ্ঞের মত, স্ক্যানিংয়ে ব্যর্থতা বা ভিআইপি সুবিধা যদি নিরাপত্তা লঙ্ঘনের কারণ হয়, তবে ভবিষ্যতে এটি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে প্রভাব ফেলতে পারে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এফএএ বাংলাদেশকে ক্যাটাগরি-১ স্বীকৃতি দেয়নি—এই দুর্বলতা আরও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে জানিয়েছেন, বিষয়টি “পুরোপুরি ভুলবশত” ঘটেছে এবং তাঁর অস্ত্র বৈধ। তাঁর ভাষায়, “শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কি করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না।”
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নেতা হলে অনেক সময় কিছু প্রিভিলেজ পায়। তবে ভবিষ্যতে সবার জন্য আইন যেন সমান হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।”