ময়মনসিংহে ডোবা ও সাপের কামড়ে ৪ জনের মৃত্যু, শিশু সাদাব নিখোঁজ

ময়মনসিংহের দুই উপজেলায় ডোবার পানিতে ডুবে তিন শিশু ও সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ডোবার পাড়ে জুতা দেখে ওই তিন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন, জেলার সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের কাউয়ালটি নামাপাড়া গ্রামের আরিফ রব্বানীর ছেলে হোসাইন (৫) ও একই গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে রেজোয়ান হোসেন (৬)।
জেলার ভালুকা উপজেলার মরচী গ্রামের হাফিজুল ইসলামের মেয়ে মীম আক্তার (৭) ও সাপের কামড়ে নিহত একই উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম তূষার (২৫)।
কোতোয়ালী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম বলেন, গতকাল শনিবার দুপুর থেকে উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের কাউয়ালটি গ্রামের হোসাইন ও রেজোয়ান হোসেন নামের দুই শিশু নিখোঁজ হয়। ওই দিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখোঁজি করেও তাদের কোন সন্ধ্যান পায়নি। পরে আজ সকালে বাড়ির পাশে ডোবার পাড়ে জুতা পড়ে থাকতে দেখে ওই ডোবা থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ওই দুই শিশু হত্যা করা হয়েছে নাকি পানিতে ডুবে মারা গেছে। তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
ভালুকায় সাপের কামড়ে নিহত জাহাঙ্গীর আলম তূষারের চাচাত ভাই এসএ টিভির সাংবাদিক আওলাদ রুবেল বলেন, ঘটনার সময় জাহাঙ্গীর আলম তূষার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীর স্টোরে কাজ করছিলেন। এসময় দোকানের ক্যাশবাক্সের নিচ থেকে একটি বিষধর সাপ বেরিয়ে তার ডান পায়ে কামড় দেয়। জাহাঙ্গীর স্বচক্ষে সাপ দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজনকে ডেকে তাকে সাপে কামড় দেয়ার বিষয়টি জানায়। পরে তাকে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রাইভেটকার যোগে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত জাহাঙ্গীর ৮ মাস আগে বিয়ে করেছিল। আজ সকাল ১০ টায় জানাজার নামাজ শেষে তাকে দাফন করা হয়।
ভালুকা উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া বলেন, গতকাল শনিবার দুপুর থেকে থেকে মরচী গ্রামের হাফিজুল ইসলামের মেয়ে মীম আক্তার (৭) বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিল। পরে সম্ভাব্য সব জাযগায় সন্ধ্যান করেও মীমের কোন সন্ধ্যান মিলেনি। পরে সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের ডোবার পাড়ে জুতা দেখে ওই ডোবা থেকে মীমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অতিরিক্ত গরম থাকায় পরে ওই দিন রাতেই মীম আক্তারের দাফন করা হয় বলেও জানান তিনি।
এদিকে, নিখোঁজের দুইদিন পার হলেও সন্ধান মিলেনি গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা থেকে নিখোঁজ সাদাবের।
শিশু সাদাব জেলার নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘুরিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল আমিনের ছেলে। সাদাব তার মায়ের সাথে নানার বাড়িতে বসবাস করতেন। গত শুক্রবার বিকালে পাগলা থানা এলাকার দিঘীরপাড় গ্রাম থেকে গত শুক্রবার দুপুরে শিশু আইমান সাদাব নিখোঁজ হয়। এখনো সাদাবের খোঁজ মিলেনি বলে জানিয়েছেন পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ফেরদৌস আলম।
তিনি বলেন, শিশু সাদাবের সন্ধ্যানে দেশের প্রত্যেক থানায় বেতার বার্তা পাঠিয়েছি এবং পিবিআই, সিআইডি ও ডিবি পুলিশের সহায়তা নিচ্ছি। আমরা শিশু সাদাবের সন্ধ্যানে সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসছেন বলেও জানান তিনি।
নিখোঁজ সাদাবের মা সুমাইয়া আক্তার আহাজারি করে বলেন, থানা পুলিশকে আমার ছেলে নিখোঁজের বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ শুধু বাড়িতে আসে আর চলে যায়। কিন্তু, আমার ছেলের কোন সন্ধ্যান দিতে পারেনি। আমার ছেলে জীবিত থাকতে ছেলের সন্ধ্যান চাই বলে আহাজারি করতে থাকেন।