নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হবে, প্রিন্স

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ইনশাআল্লাহ নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হবে। নির্বাচনের পর জনগণ প্রদত্ত দায়ীত্ব পালন এবং জন আকাঙ্ক্ষা ও জনগণকে প্রদত্ত ওয়াদা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে নেতাকর্মীদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি তারেক রহমানের ৩১ দফা ও জনকল্যাণে প্রতিশ্রুতি সমুহ নির্ভুলভাবে জেনে তা জনগণকে অবহিত করার আহবান জানান।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির সদস্য নবায়ন ও প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ উদ্বোধন শেষে কৈচাপুর ইউনিয়নের নলুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স, বলেন জুলাই আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে অভ্যুত্থান নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্টের দোসরেরা ধৃষ্টতাপূর্ণ অপপ্রচার করছে।
ফ্যসিবাদের পতনের এক বছর যেতে না যেতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে সুপরিকল্পিতভাবে অনৈক্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই সুযোগে ফ্যাসিস্টদের আস্ফালনে জনগণ ক্ষুব্ধ।
তিনি বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্য যখন সুদৃঢ় থাকার কথা, তখন গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক ঐতিহ্যের পরিপন্থি অপ্রয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক এবং অবাস্তব বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনে জাতীয় ঐক্যে চিঁড় ধরানো হচ্ছে। লন্ডন বৈঠকে ডক্টর মুহম্মদ ইঊনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে রোজার আগেই নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি হবার পর এসব নিত্য নতুন ইস্যু সামনে এনে জটিলতা সৃস্টির অপপ্রয়াস ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচন আয়োজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করে।
বিএনপি গণতন্ত্র ও ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে সংস্কার প্রশ্নে অনেক ছাড় দিয়েছে উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ৯০ শতাংশ সংস্কারের সাথে বিএনপি একমত হবার পরও কেউ কেউ এমন ধারণা প্রচার করছে যে, বিএনপির অনীহার কারণে সংস্কার প্রক্রিয়া এগুচ্ছে না, যা সম্পূর্ণ অসত্য।
তিনি সংস্কার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সর্বাত্মক প্রস্তুতির আহবান জানিয়ে বলেন, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা জনগণ মেনে নিবে না। তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে জনগণ-নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ইনশাআল্লাহ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, অতিদ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নাই। নির্বাচন বিলম্বিত করতে মহল বিশেষ অপচেষ্টায় পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী গোষ্ঠী লাভবান হবে। দুই তিনটি দল প্রার্থী ঘোষণা করে ময়দানে জনগণের সমর্থন না পেয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করতে নিত্য নতুন ইস্যু তৈরি করে জটিলতা বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পর জনগণের রায়ে সরকার গঠন করলে বিএনপি জনগণের জন্য কী করবে তা ইতিমধ্যেই উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু অপরাপর রাজনৈতিক দলের এ ধরণের কর্মসূচি নাই। তারা ব্যস্ত বিএনপি সর্ম্পকে অপপ্রচারে এবং নির্বাচন বিলম্বিত করতে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির কর্মসুচির নামে গণঅভ্যুত্থানের একক দাবিদাররা বিভিন্ন এলাকায় পদযাত্রার নামে গাড়ী যাত্রা করে নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দলীয় কুপণের নামে বেহেশতের টিকিট বিক্রয়কারীরাও প্রার্থী ঘোষণা করে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এরা ভোটার ময়দানে জনগণের সমর্থন না পেয়ে নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে এসব কথা বলছেন। উপজেলাব্যাপী দলীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন প্রাথমিক সদস্য অন্তর্ভূক্তি কার্যক্রম দলীয় নির্দেশনা অনুস্মরণ করে সতর্কতার সাথে সম্পন্ন করার আহবান জানান। সমাজ বিরোধী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজসহ আওয়ামী দোসররা যাতে দলে জায়গা না পায় সেদিকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
কৈচাপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নুরুল ইসলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আশরাফ, মিজানুর রহমান, শফিকুর রহমান, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইফতেখার রসূল খোকন, মির্জা মিজান, রুহুল আমিন ফকির, আবুল কাশেম সরকার, মির্জা আবুল বাশার, সায়েদুর রহমান হারুন, নূর হোসেন, ভেকিপাড়া গ্রাম বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম ছয়ফলসহ প্রমুখ।
