ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙ্গে দিল প্রশাসন

সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহ ব্রহ্মপূত্র নদের তীরে অবস্থিত ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় পার্শ্ববর্তী পার্কেরও একাধিক অবৈধ স্থপনা ভেঙ্গে দেয় প্রশাসন। এদিকে পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নাগরিকদের পক্ষ থেকে প্রশংসা পাওয়া গেলেও ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ময়মনসিংহের কবি সাহিত্যিকরা।
প্রায় ৪০ বছর ধরে এ স্থানটিতে সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ এর ব্যবস্থাপনায় কবি সাহিত্যকদের আলোচনা-সভা-মতবিনিময় অনুষ্টিত হয়ে আসছে প্রতি শুক্রবার। তবে কয়েক বছর আগে সাহিত্য সংসদ ভেঙ্গে দু’ভাগ হয়ে বীক্ষনের আরেকটি অংশ ভিন্ন স্থানে সাহিত্য-আড্ডা অনুষ্ঠান করে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো জানায়, বুধবার জেলা প্রশাসন ও মসিক ( ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন) যৌথভাবে ময়মনসিংহ পার্কের ভেতরের ও বাইরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায়।
অভিযানের এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম নিজে উপস্থিত হয়ে অভিযানের তদারকি করেন। অভিযান কালে পার্কের ভেতরের বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করে ভেঙ্গে ফেলা হয়। এরপর অভিযান চলে পার্কের পূর্ব অংশে।
এখানে সড়কের পাশে সাহিত্য সংসদের একটি পাকা উন্মুক্ত মঞ্চ ছিল। যা বীক্ষণ মঞ্চ নামে পরিচিত। এ মঞ্চটি বুলডেজার দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। খবর পেয়ে সাহিত্য সংসদ ও বীক্ষনের সদস্যরা এসে ভাঙ্গচুরের প্রতিবাদ জানান। তারা ফেসবুক লাইভে এসে এ ঘটনার জন্য নিন্দা জানান। এবং দায়ীদের শাস্তি দাবী করেন। নইলে ময়মনসিংহে আন্দোলন গড়ে তোলারও কথা বলেন।
লেখক আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুরো ঘটনাটি দু:খ জনক। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান। তিনি দায়ীদের শাস্তিও দাবী করেন। কবি ও সাহিত্যিক ইয়াজদানী কোরায়শী কাজল বলেন, পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রশাসন একটি ভুল কাজ করলো। সমাজকর্মী ওহিদুর রহমান ফেসবুকে লিখেন, যেখানে দাড়িয়ে কথা বলেছেন দেশ বরেণ্য বুদ্বিজীবীরা, জ্ঞানী গুণীরা, ৪০ বছরের সেই ইতিহাস মুছে ফেলার আগে ভেবে দেখা উচিত ছিল।
সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজিদ বলেন, কাগজপত্রে সাহিত্য সংসদ বলতে সেখানে কিছু নেই। অবৈধভাবে কোন জায়গা দখল করলে তো হবে না। সাহিত্য সংসদ আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করে দেব। ওই এলাকাটি মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলমকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি।